পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A) రీ বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । ইতি প্রবোধ-চন্দ্রিকায়াং প্রথম স্তবকে সোদাহরণ গদ্য-নিরূপণে পঞ্চম কুসুমং । প্রতারকের প্রতারণাতে বিশ্ববঞ্চকও বঞ্চিত হয় সরল লোকেরা যে বিড়ম্বিত হয় তাহা কি কহিব ইহার কাহিনী | ভোজপুরে বিশ্ববঞ্চক নামে এক জন থাকে তাহার ভাৰ্য্যার নাম গতিক্রিয়া পুত্রের নাম ঠক। সে ব্যক্তি স্বতের ঘটেতে ছাই ধুলা অঙ্গর পূরিয়া উপরে এক অধিসের ঘি দিয়া দেশে দেশে সহরে সহরে নগরে নগরে গ্রামে গ্রামে অনিয়ত বেশে ভ্রমণ করিয়া ঘড়া শুদ্ধ তোলিয়৷ দিয়া সম্পূর্ণ মূল্য লয়। কেহ যদি ঘড়া ভাঙ্গিয় দুই তিন সের স্কৃত লইতে চাহে তবে তাহাকে দেয় না এবং বলে যে এ হৈয়ঙ্গবীন অত্যুত্তম স্থত দেবতাদের হোমের উপযুক্ত আমি এ ঘড়া হইতে তোমাকে কিছু দিতে পারিব না যদি তোমার দেব ব্রাহ্মণের নিমিত্ত নেওয়ার আবশুক থাকে তবে বরং অনুমানে এ ঘড়াতে যত স্থত হয় তাহার এক অধিসের নূ্যন করিয়া ঘড়া সমেত দিতে পারি কিন্তু ঘড়া হইতে ভাঙ্গিয় কিঞ্চিৎ সৰ্ব্বদ দিতে পারি না। কেননা যদি কিছু দেই তবে বিশিষ্ট লোকেরা এ স্থত লইবে না কহিবেন এ স্কৃতের অগ্রভাগ তুই খাইয়াছিস কিম্বা অন্ত কাহাকেও দিয়াছিস অবশিষ্ট ভাগ দেবতাদিগকে দেয় হয় না তবে লইয়া কি করিব। বিশ্ববঞ্চকের এই বাক্য শ্রবণ করিয়া ক্রেতার কেহ কহে আমার অল্প স্কৃতের প্রয়োজন দুই একসের তাহ যদি দিতে তবে লইতাম অধিক ছবির কাৰ্য্য নাই। এই রূপ কহিয়া কেহ ফিরিয়া যায় কেহ বা উপযুক্ত মূল্য দিয়া ভাণ্ড সমেত সকল স্কৃত কদাচিৎ লইয়া যায়। এইরূপে সৰ্ব্বজনকে বিড়ম্বন করিয়া বেড়ায়। দৈবাৎ একদিন ঐ বিশ্ববঞ্চকের দ্যায় আর একজন বিশ্বভণ্ড নামে এক কৃপাতে পাক কাদা পূরিয়৷ তদুপরি কতক গুড় দিয়া ঐ কৃপা মাথায় করিয়া ইতস্ততঃ ভ্রমণ করিতে করিতে শ্রান্ত হইয়া বিশ্রামার্থে এক বৃক্ষের ছায়াতে বসিয়া আছে। ইতি মধ্যে তাদৃশ সপি কুন্ত মস্তকে করিয়া ভ্রমণ করত ক্লান্ত হইয়া বিশ্ববঞ্চকও ঐ তরুমূলে উপস্থিত হইল। পরে বিশ্বভণ্ডের সহিত সন্তাষ করিয়া তাহাতে বিশ্বস্ত হইয়া তাহার নিকটে স্কৃতঘট গচ্ছিত করিয়া আপনি স্নানার্থে পুষ্করিণীতে গমন করিল। অনন্তর ঐ বিশ্বভণ্ড মনে বিচার করিল গুড়ের কুপা মাথায় করিয়া কত বেড়াইব । উপস্থিত ত্যাগ করিয়া অনুপস্থিত কল্পনা করা উপযুক্ত নয় এ বেটা সরোবরে অবগাহন করিয়া আসিতে আসিতে আমি আপন গুড়ের কৃপা ছাড়িয়া উহার সম্পূর্ণ স্কৃত কুন্তু লইয়া শীঘ্ৰ পলায়ন করি।