পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२ কলিকাতা সেকালের ও একালের । মহানীল-তন্ত্রে “কালীঘাটে গুহাকালী” বলিয়া এক দেবীর নামোল্লেখ আছে । পঞ্চদশ শতাব্দীর লোকে, এই “গুহ-কালীর” পূজাৰ্দ্ধনাদি করিত। এতদ্বাৰ্তাত আচার-নির্গম-তন্ত্র, মহালিঙ্গ-তন্ত্র, চূড়ামণিতন্ত্র প্রভৃতি কয়েকখানি গ্রন্থেও কালীঘাটের নামোল্লেখ আছে। অনেকে অনুমান করেন, এই তন্ত্রগুলি অপেক্ষাকৃত পরবর্তী কালে রচিত। কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ১৫৪৫ খ্ৰীঃঅব্দে রচিত চওঁীকাব্যে—গঙ্গাতীরের যে বর্ণনা করিয়াছেন— তাহাতে কালীঘাটের নামোল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। মুকুন্দরামের চণ্ডীতে, ধনপতি সওদাগরের বাণিজ্য-যাত্রা প্রসঙ্গে লিখিত আছে— ত্বরায় বহিছে তরি, তিলেক না রয় চিৎপুর, শালিখা সে এড়াইয়া যায়। কলিকাতা এড়াইল, বেনিয়ার বালা বেতড়েতে উত্তরিল, অবসান বেলা । ডাহিনে ছাড়িয়া যায়, হিজলীর পথ রাজহংস কিনিয়া লইল পারাবত। বালুঘাট এড়াইল, বেণের নন্দন, কালীঘাটে গিয়া ডিঙ্গা, দিল দরশন । অনেকে অনুমান করেন, সে সময়ে, কলিকাতা গভীরু বনজঙ্গলে সমাচ্ছন্ন ছিল । সুতরাং এ রচনা মুকুন্দ-রামের নহে, তাহার চওঁী-কাব্য" মধ্যে, অপর কোন ব্যক্তি কর্তৃক প্রক্ষিপ্ত হইয়াছে। যাহাই হউক না কেন, কালীঘাট যে পঞ্চদশ শতাব্দীর পরেই খ্যাতি লাভ করিয়াছিল, তাহ পরবর্তী অধ্যায়ে বিবৃত হইবে। কলিকাতায় সে সময়ে আর একটা কালীমন্দির বর্তমান ছিল। ইহা বর্তমান কালের “চিত্ৰেশ্নরীর মন্দির। এই চিত্রেখর হইতেই "চিৎপুর" নামকরণ হইয়াছে। কোন সময়ে, কোন ব্যক্তি, এই চিত্ৰেশ্বরীর স্থাপনা করেন,—তাহার কোন সন্ধানই পাওয়া যায় না। তবে জনশ্রুতি এই, এই কালী-প্রতিমা “চিতে” নামক দক্ষ্যদলপতি দ্বারা স্থাপিত। সেকালের ডাকাতের কালীর পূজা, না করিয়া, কোন স্থানে ডাকাতি করিতে ধাইত না। সে ভীষণ সময়ে, জলে স্থলে ডাকাতি চলিত। কেহ কেহ অনুমান করেন, সৰ্ব্বাগ্রে এই মন্দির গঙ্গাতীরে জঙ্গলমধ্যে ছিল। পরে ক্রমে ক্রমে গঙ্গার কুল ভরাট হুইয়া পড়ায়, ইহা দূরে আসিয়া পড়িয়াছে। এই চিত্রেশরীর মন্দিরেই ডাকাতের নরবলি দিওঁ। গঙ্গাতীরন্থ বিজন অরণ্যমধ্যে এই মন্ত্রির স্থাপিত ছিল। এই