পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

?විෂ কলিকাতা সেকালের ও একালের । পারগু-ভাষা শিক্ষা করেন। যশোহরে রাজধানী নিৰ্ম্মিত হইলে, তিনি পরিজনবর্গের সহিত যশোহরে আসেন। উপযুক্ত শিক্ষকের অধীনে, অস্ত্রবিদ্যা, মল্পবিস্তা, অশ্বারোহণ প্রভৃতি শিক্ষা করিয়া-প্রতিভার পরিচয় প্রদান করেন। শর-চালনায় ও অশ্বারোহণে তিনি অতিশয় দক্ষ ছিলেন। প্রতাপের এই বীরপ্রকৃতি, বিক্রমাদিত্য আদৌ পছন্দ করিতেন না। বাল্যকালে পণ্ডিতগণ ‘প্রতাপের ঠিকুজী-কোষ্ঠী দেখিয়া বলিয়াছিলেন–“মহারাজ ! এই বালক পিতৃদ্রোহী হইবে।” # প্রতাপের প্রতি কাৰ্য্যেই বিক্রমাদিত্য বুঝিলেন—“এই বীরত্বাভিমানই প্রতাপের সর্বনাশ করিবে।” বিক্রমাদিত্য পরম ধাৰ্ম্মিক ও শাস্তি-প্রিয় ছিলেন। যিনি বৈষ্ণবকবি গোবিন্দদাসের, রাধাকৃষ্ণ-বিষয়ক পদাবলী শ্রবণে আত্মতৃপ্তি লাভ করিতেন—তিনি ৰে পুত্রের এই বীর-প্রকৃতির উপর বিরক্ত হইবেন, তাহার আর আশ্চৰ্য্য কি ! একদিনের ঘটনায়, তাহার মনোমধ্যে সযত্নে প্রচ্ছন্ন, এই বিরক্তি-ভাব প্রকাশ হইয়া পড়িল। আকাশে একটা পার্থী উড়িয়া যাইতেছিল, প্রতাপ শরাঘাতে সেই পক্ষী বধ করেন। ইহা দৃঢ়-লক্ষ্যের পরিচয় । বিক্রমাদিত্য যে স্থানে বসিয়াছিলেন, নিহত পক্ষী সেই স্থানে পড়িয়া যাতনায় ছটফটু করিতে লাগিল। পক্ষীকে এরূপ নিষ্ঠুর ভাবে কে বধ করিল—এই ব্যাপারের অনুসন্ধানে, বিক্রমাদিত্য যখন জানিতে পারিলেন, তাহার পুত্র প্রতাপ কর্তৃক এই শকুন শরাহত হইয়াছে, তখন তিনি প্রতাপকে ডাকিয়া যথেষ্ট ভৎসনা করিলেন । মানব মাত্রেই ভ্ৰমান্ধ । ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি রাখিয়া, কে কবে কাজ । করিতে পারিয়াছে ? মানুষ প্রজ্ঞাবান ও মনস্বী হইলেও, কুৰ্ম্মফল তাহাকে প্রলুব্ধ করিয়া, বিপরীত পথে লইয়া যায়। প্রতাপ-সম্বন্ধে পণ্ডিতগণের কোষ্ঠীফল বিচার, বিক্রমাদিত্যের মনে, বড়ই আধিপত্য প্রকাশ করিয়াছিল। তিনি মনমধ্যে সৰ্ব্বদাই আলোচনা করিতেন—“এই পুত্র আজীবন আমার অবাধ্য হইবে।” প্রতাপের কাজকর্শ্বেও সেই ভাব স্বচিত হইতে লাগিল । ইহাতে বিক্রমাদিত্যের মনে, “পিতৃদ্রোহিতার" এই সংস্কারটা আরও বদ্ধমূল হইয়া পড়িল। কেবল বিক্রমাদিত্য নহেন, প্রতাপের কোন বিষয়ে অবাধ্যতা দেখিলে, অন্যান্ত পরিজনেরাও র্ত্যহাকে পিতৃ-দ্রোহী বলিয়া ভৎসৰ্না করিতেন। এই রূপ ভৎসনার ফল অতি বিষময় হইল ! প্রতাপ, উহার বাল্যজীবন গৌড়ে অতিৰাহিত করিয়াছিলেন। গৌড়ে