পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 কলিকাত সেকালের ও একালের । দরিদ্র বিদ্যাগীদের অর্থদান,প্রভৃতি পুণ্য কৰ্ম্মাহুষ্ঠানে, বারাণসীবাসী সকলেরই ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাত্র হন । নগরের অধিবাসীগণকে কয়েক দিবস ধরিয়৷ প্রচুর পরিমাণে খাদ্য ও অর্থাদি প্রদান করেন। আজও বারাণসীতে তাহার কীৰ্ত্তি সমূহ বর্তমান । * বারাণসী ত্যাগ করিয়া নানাদেশে পরিভ্রমণান্তর, প্রতাপ অবশেষে যশোহরের সন্নিকটস্থ হইলেন। র্তাহার অধীনস্থ বিপুল-বাহিনী, পুৰ্ব্ব হইতেই শ্রেণীবদ্ধ-ভাবে সজ্জিত করিয়া, নগর অবরোধ করিলেন । পাছে পিতৃব্য বসস্তুরায়, তাহাকে কোনরূপ বাধা প্রদান করেন, ইহাই তাহার প্রধান আশঙ্কা । এরূপ বিগ্রহ-ব্যাপারে, রাজকোষ হস্তগত থাকা বিশেষ প্রয়োজন বুঝিয়া, তিনি রাজকোষ দখল করিলেন। কেহ তাহাকে বাধা দিল না ! মহারাজ বিক্রমাদিত্য, পুত্রের এই অদ্ভুত ব্যাপারে অতিশয় বিরক্ত ও আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইয়।--ভ্রাতার সহিত প্রতাপের শিবিরে উপস্থিত হইলেন। পিতা ও পিতৃবাকে সহসা সেই ভাবে, তাহার স্কন্ধাবণর মধ্যে উপস্থিত হইতে দেখিয়া, প্রতাপ বড়ই লজ্জিত ও মনঃক্ষুণ্ণ হইলেন। তখনই পিতা ও পিতৃব্যের চরণ-বন্দনা করিয়া অধোবদনে দাড়াইয়া রহিলেন । বিক্রমাদিত্য পুত্রকে অমৃতপ্ত দেখিয়া, তাহার সমস্ত অপরাধ মার্জন করিয়া বলিলেন- —“বৎস । আমরা আর কতদিন दक्लेिद'; রাজা ত তোমারই । তবে তোমার এরূপ ভাবে নগরাবরোধের প্রয়োজন কি ? কোন পিতা, পুত্রের উন্নতি কামনা না করেন ? তুমি কি মনে ভাবিয়াছিলে—যে তোমার স্নেহময় পিতৃবা, তোমার রাজ্যলাভে বাধ৷ দিবেন ?” 總 প্রতাপ অনুতপ্ত চিত্তে, পিতা ও পিতৃব্যের নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিলেন। সমস্ত গোলযোগ, মনান্তর, আকৌশল এই খানেই মিটিল। প্রতাপই প্রকৃত পক্ষে রাজ্যেশ্বর হইলেন। বসন্তরায় ও বিক্রমাদিত্য কেবল ঈশ্বরোপাসনা ও

  • অনেকে অনুমান করেন—চৌষট্রি-যোগিনীর ঘাট, প্রতাপড়িতের ব্যয়েই নিৰ্ম্মিত হয়। এ ঘাটটা আজও বর্তমান। ধরিতে গেলে—এই ঘাট, কাশীর মধ্যে বাঙ্গালীদের অতি প্রাচীন-কীৰ্ত্তি । এই ঘাটের সন্নিধ্যে, ভদ্রকালী প্রতিমাওঁ উপহার প্রতিষ্ঠিত। এই সম্বন্ধে আমাদের আর একটা কথা মনে পড়ে। একদিকে-প্রতাপের চৌষট্রি-যোগিনীর ঘাট যেমন উহার কাশীর প্রধান কীৰ্ত্তি, আবার অন্য দিকে উহার ঘোর শত্র, মহারাজ মানসিং মান-মশির" প্রতিষ্ঠা দ্বারা অক্ষয় কীৰ্ত্তি রাশিয়া শিয়াছেন। কোথায় কী প্রতাপাদিতা—আর কোথায় বা সেই মানসিংহ-কিন্তু উহাদের কীৰ্ত্তি আজও অবিনশ্বর ভাবে বর্তমান।