পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায়। ぐりう জাহাঙ্গীর ধীরচিত্তে বিবেচনা করিয়া দেখিলেন, মানসিংহকে তাহার বড়ই প্রয়োজন । বঙ্গদেশের উীষণ বিদ্রোহ ব্যাপার, তাহার হৃদয়কে বড়ই আলোড়িত করিতেছিল। মানসিংহ–বিংশতি সহস্ৰ বলীয়ান, স্বযোদ্ধা রাজপুত-সেনার অধিনায়ক। কাজেই জাহাঙ্গীর-ধারত অবলম্বনে মানসিংহকে বলিয়া পাঠান—“মহারাজ ! আমি আপনার এবং আমার পুত্ৰ যুবরাজ খসরুর, সমস্ত অপরাধ মার্জনা করিলাম। আগরা-দরবারস্থ যে |ਂ আত্মীয়-বন্ধু এবং আমীর-ওমরাহ ইতি পুর্বে আমার বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছিলেন, তাহাদেরও মার্জন করিলাম। আপনার পুনরায় সম্রাট সরকারে স্ব স্ব কৰ্ম্মে নিয়োজিত হইলেন।” এই অভয়বাণী পাইয়া, মহারাজ মানসিংহ আগরায় ফিরিয়া আসেন । কিয়ৎদিন পরে—জাহাঙ্গীর মানসিংহকে, বঙ্গের বিদ্রোহ-দমনের, সেনাপতি পদে নিযুক্ত করিয়া, বঙ্গদেশে প্রেরণ করেন। জাহাঙ্গীরের মনের গৃঢ় উদেশ্ব অঙ্গরূপ। তিনি মানসিংহের উপর বহুদিন হইতেই বিরক্ত। তিনি মনে ভাবিলেন—মনসিংহের মত এক প্রতাপশালী ব্যক্তিকে, সিংহাসনের এত নিকটে রাখা, কোন ক্রমেই যুক্তিযুক্ত নহে। অথচ তাহাকে গোপনে হত্যা করা অতি অসম্ভব কাৰ্য্য। বঙ্গদেশে যুদ্ধ-ব্যাপারে লিপ্ত হইলে, মানসিংহ রাজধানী হইতে দুরেও থাকিবেন—অথচ যুদ্ধ ক্ষেত্রে যদি তিনি শত্রুতন্তে |ੇ হন—তাহা হইলে তাহার এক প্রবল শত্রু অতি সহজেই ধরাধাম | হইতে অপস্থত হইবে। কাবুল-বিজয়ী, বীরত্বাভিমানী, মহারাজ মানসিংহ –অগণ্যবাহিনী সমেত বঙ্গ-দেশাভিমুখে যাত্রা করিলেন। বারাণসীতে উপস্থিত হইয়া, তিনি বিশ্বেখর ও অন্নপূর্ণার পূজাদি করিলেন। সেই সময়ে কাশীতে তাহার মানমনির প্রতিষ্ঠা হইতেছিল—তাহার সম্বন্ধেও নানাবিধ সুব্যবস্থা করিলেন । একদিন মানসিংহ দেখিলেন—এক তেজঃপুঞ্জ কলেবর, গৈরিকধারী গম্ভীর-মুঠি সন্ন্যাসী, মণিকর্ণিকার ঘাটে বসিয়া, একান্ত চিন্তে ভগবানের স্তব পাঠ করিতেছেন। র্তাহার নয়ন-প্রাস্ত দিয়া, ভক্তি-আশ্র প্রবাহিত হইতেছে। সেই স্তব-মন্ত্র, উদাত্ত-অচুদাত্তাদি স্বরে অনুপ্রাণিত হইয়া, সেই নির্জন স্থান বিকম্পিত করিতেছে । সন্ন্যাসী গভীর রাত্রে, সেই স্থান ত্যাগ করিলেন । মহারাজ মানসিংহ নিঃশব্দে তাহার পশ্চাৎবর্তী হইলেন। সন্ন্যাসী এক নির্জনমুঠে প্রবেশ করিলেন । মানসিংহও ঠাহীর অনুসরণ করিয়া মঠfভ্যস্তরে প্রবিষ্ট হইলেন।