পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१९ কলিকাতা সেকালের ও একালের । বন্দোবস্ত যাহাতে সুচারুরূপে নিম্পন্ন হয়, তাহার জন্য তিনি প্রাণপণে খাটিতে লাগিলেন। যশোর-নগরীও এই সময়ে পরিখা, খাত প্রভৃতি দ্বারা মুরক্ষিপ্ত হইল । মানসিংহ উপযুক্ত স্থানে স্কন্ধাবার স্থাপন করিয়া, অসি ও শৃঙ্খলসহ মহারাজা প্রতাপাদিত্যের নিকট এক দূত প্রেরণ করেন । দূত রাজসভায় উপস্থিত হইলে, প্রতাপ ও তাহার সভাসদ—কেশব ভট্টাচাৰ্য্য, মানসিংহকে যথেষ্ট তিরস্কার করিয়া তৎপ্রেরিত অসিগ্রহণ করেন। দূত, প্রতাপ পরিত্যক্ত সেই শৃঙ্খল হস্তে, মানসিংহের নিকট উপস্থিত হইয়া সকল কথাই তাহাকে জানাইল । - মানসিংহ প্রতাপাদিত্যের নিকট বঙ্গ্যতার আশাই করিয়াছিলেন । কিন্তু এরূপ দন্তপূর্ণ উত্তর পাইয়া, তিনি সেনাগণকে সজ্জিত হইবার আদেশ প্রদান করিলেন । এই সময়ে কচুরায় আসিয়া মানসিংহকে বলিলেন—“মহারাজ ! প্রতাপ অতি ক্রুরকর্ম ও কূটকৌশলী । আপনি একটু বিবেচনার সহিত কাৰ্য্য করিবেন। কয়েকট যুদ্ধে জয়লাভ করিয়া, প্রতাপ অতিশয় দপিত ছইয়াছে। সাধারণের মনের উপর তাহার অসীম ক্ষমতা । সাধারণে প্রতাপকে সমরে বিজয়দাত্রী, কালীর বরপুত্র বলিয়া বিবেচনা করে । প্রতাপ মোগলসৈন্যের বিনাশার্থ এই সন্নিকটবৰ্ত্তী প্রান্তর-সমূহনুমধ্যে বারুদ পুতিয়া রাবিয়াছে।” মানসিংহ, কচুরায়ের পরামর্শে বিশেষ সতর্কতার সহিত বুহি-রচনা করিলেন । দক্ষিণে অশ্বারোহী ও পদাতিক, ৰাম দিকে গোলন্দাজগণ, সম্মুখে গজারোহী চমূ স্থাপন করিয়া, মহারাজ মানসিংহ বীর-বিক্রমে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। প্রতাপও র্তাহার প্রিয়-সহচরগণ অর্থাৎ— স্বৰ্য্যকান্ত, রঘুনন্দন প্রভৃতিকে লইয়া দূর্তেষ্ঠ ব্যুহ-রচনা করিলেন। এবারের সমরের বিশেষত্ব এই—নবীন বয়স্ক রাজকুমার উদয়াদিত্য সেনানায়ক হইয়া, প্রতাপ-সৈন্তের এক প্রয়োজনীয় দিক রক্ষা করিতে লাগিলেন। প্রতাপকে জীবন্ত ধরিতে পারিলে বা নিহত করিতে পারিলে, বাঙ্গলার যুদ্ধানল সহজেই নিৰ্বাপিত হইবে, ইহা ভাবিয়া-মানসিংহ বাছাবাছ রাজপুত, পাঠান ও মোগল-সৈঙ্গ দ্বারা দুর্ভেদ্য বৃহ-রচনা করিলেন। পরদিন প্রাতঃকালে প্রতাপ—সৈন্তসহ মানসিংহকে আক্রমণ করেন। পূৰ্ব্বদিনের যুদ্ধ অপেক্ষ সে দিনের যুদ্ধ অতি ভয়াবহ৭ এ ভীষণ যুদ্ধে অনেক হিন্দু ও মোগল-সেনা নিহত হইল।