পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so কলিকাতা সেকালের ও একালের । আলিঙ্গন করেন । এই সময়ে উভয়ের মধ্যে প্রগাঢ় বন্ধুত্ব জন্মে। মানসিংহ— ইশাখাকে আগরায় লইয়া গিয়া,আকবর সাহের সহিত পরিচিত করিয়া দেন। ষাদসহ ইশাখশর গুণাবলীর ও মহত্বের পুরস্কার স্বরূপ, তাহাকে শিরোপ, খেলাৎ ও চট্টগ্রাম প্রদেশের একাধিপত্য প্রদান করেন। f এই ইশাখণর সহিত, বিক্রমপুরের রাজা চাদরায়ের প্রগাঢ় বন্ধুত্ব ছিল। ইশাখ, মধ্যে মধ্যে শ্ৰীপুরে আসিয়া, চাদরায়ের আতিথ্য-স্বীকার করিতেন। চাদরায়ও বন্ধুর পদোপযুক্ত সমাদর করিয়া, তাহার মর্য্যাদা রক্ষা করিতেন । কিম্বদন্তী এই—যে নবাব ইশাখী,কোন এক সময়ে তাহার বন্ধু, চাদরায়ের আতিথ্য-স্বীকার করেন । এই সময়ে, একদিন তিনি ঘটনাক্রমে, চাদরায়ের পরম রূপবতী বিধবাকস্তা, সোণামণিকে দেখিতে পান। সেই দেবদুলভ অনিন্দ্যরূপরাশি, মুহূৰ্ত্ত মধ্যে র্তাহার মহত্বময় হৃদয় অধিকার করিল। দুৰ্দ্দমনীয় রিপুর তাড়নায়, তিনি প্রাণের স্বভাবসিদ্ধ মহত্ব হারাইলেন । সোণামণির লোকলোচন-দুলভ অতুলনীয় রূপরাশি, আর তাহাকে পাইবার আকাঙ্ক্ষা, ইশাখণর হৃদয়ের স্বাভাবিক উদারতার বিলোপ করিয়া, ঘোর নীচত তানিয়া দিল । প্রাণের মধ্যে, সোণামণির রূপের ছবি আঁকিয় লইয়া, ইশাখা নিজ রাজধানীতে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন । কিন্তু সহস্র কার্য্যের মধ্যেও--তিনি সেই অতুলনীয় রূপসী সোণাকে ভুলিতে পারিলেন না। সেই লোক-ললাম-ভূত, সুন্দরীর রূপ-জ্যোতিতে আত্মহারা হইয়া, তিনি সোণামণির হস্ত প্রার্থনা করিয়া, চাদরায় ও কেদাররায়ের নিকট এক দূত প্রেরণ করিলেন। ইশাখার এই নীচজনোচিত প্রার্থনায়, চাদরায়.ও কেদাররায় সাতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া, দুতকে অপমান করিয়া তাড়াইয়া দেন । ইহার পর, কেদার রায়, এই অপমানের প্রতিশোধ লইবার জন্য, ইশাখীর কলাগাছিয়ার দুর্গ অবরোধ করেন। ইশাখণ—আত্মরক্ষার অন্য কোন উপায় না দেখিয়া, তাহার ত্রিবেণী দুর্গমধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করেন। কেদাররায়, ত্রিবেণী-দুর্গ অবরোধ করিয়া, খিজিরপুর লুণ্ঠন করেন। এই সব ব্যাপারে, ইশাখার চৈতন্যোদয় হইল! হিন্দুর নিকট কন্যা-প্রার্থনা করিয়া, তিনি যে কি ভয়ানক কাজ করিয়াছেন—তাহ তখন বুঝিতে পারিলেন। তিনি যখন এই ভীষণ বিপদ হইতে উদ্ধারের উপায় চিন্থায় ব্যস্ত—সেই সময়ে অযাচিত ভাবে, বিধাতা-প্রেরিত এক মহামুযোগ, তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইল।