পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७२ কলিকাতা সেকালের ও একালের । চাণক এই সংবাদ অবগত হইয়া, মঙ্গ বিপদে পড়িলেন। যুদ্ধ বিনাজলে’ কোন উপায়ই নাই। তিনি অগত্য স্বতালুট ত্যাগ করিয়া, মালপত্রও জাহাজদি সমেত মেটিয়াবুরুজে উপস্থিত হইলেন । এইখানে, বাদসাই। নিমকমহল ছিল । * “থানা” বলিয়া একটি দুর্গও ছিল। চার্ণক, বাদসাল নিমকমহলের ঘরগুলি পোড়াইয়া দিলেন ও সঙ্গে সঙ্গে খান দুর্গটও দখল করিয়া লইলেন। মোগলের সহিত ইংরাজের প্রকাশ্যভাবে শক্রত আরম্ভ হইল। চার্ণক যে সময়ে “খান” দুর্গের ধ্বংশসাধনে নিযুক্ত, সেই সময়ে তাহারই আদেশে, কাপ্তেন নিকলসন, অৰ্দ্ধেক সৈন্ত ও জাহাজ লইয়া, হিজলী অধিকারের জন্য প্রেরিত হইলেন। পাঠক এই সমস্ত ঘটনা হইতে বুঝিতে পারিতেছেন, কলিকাতা প্রতিষ্ঠাকারী জব চার্ণক, কিরূপ দুঃসাহসিক লোক ছিলেন । ইংরাজ কর্তৃক সুতালুট ত্যাগ হিজলী অধিকার এবং উলুবেড়িয়া ও সুতালুটতে পুনঃ প্রত্যাগমন । - ( ১৬৮৭—১৬৮৮ ) কলিকাতার পার্শ্ববাহিনী ভাগিরথী, এখন যে অবস্থায় উপনীত, তিনশত বৎসর পূৰ্ব্বে ঠিক সেরূপ ছিল না। যে হিজলীতে, চার্ণক আশ্রয় লইয়াছিলেন সে হিজলীও এখানকার মত মুগম ছিল না। চারিদিকে অসংখ্য নদী, বাণি । য়াড়ির স্তুপ, উত্তাল তরঙ্গময়ী জাহ্নৱী জলরাশির তাণ্ডবনৃত্য, ইত্যাদি কারণে হিজলীর সে সময়ের অবস্থা, অতি ভয়ানক ছিল । সহজে কেহ তথায় যাইতে চাহিত না। আর অন্য স্থান হইতে কোন লোক হিজলীতে পৌছিলে তাহার জীবন লইয়া ফিরিয়া আসা অসম্ভব হইত। কারণ একটা প্রবাদবাক্য আছে “একবার থেলে হিজ লী-পাণি যমে-মাতুষে—টানাটানি।” ইহার কারণ আর কিছুই নহে, দুই শতাব্দী পূৰ্ব্বে হিছ্‌লী, জর ম্যালেরিয়া ওঁ ! উদরাময়ের আবাসকেন্দ্র ছিল । চার্ণক হুগলী হইতে পলাইয়া মুতালুটিতে আসিলেন বটে, কিন্তু তথা নিশ্চিন্ত হইয়া থাকিতে পারিলেন না । মোগলেরা কখন যে পঙ্গপালের মত

  • আজও মেটিয়াবুরুজের তদূরবর্তী একটী স্থান নিমকমহল বলিয়া পরিচিত। এখনও নিমকমহলের রাস্তাটা “নিমকমহল ঘাট রোড" বলিয়৷ সাধারণে পরিচিত আছে ।