পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৭৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭০২ কলিকাতা সেকালের ও একালের । এক ওয়ারেন্ট পাই। এই ওয়ারেন্টে, বর্তমান আসামীগণের অন্যতম, রুসো সাহেবকে ধরিবার আদেশ ছিল। এই আদেশ-পত্ৰ পাইয়াই আমি ফিট্‌জেরাল্ড নামক আর এক কনষ্টেবলকে লইয়া, রুসোর বাট থানাতন্ত্রাসী করিতে যাই। এই খান-তল্লাসীর ফলে, আমরা একটা অণধারে লণ্ঠন, কতকগুলি কাপড়ের থান, একখানি তরবারি ও একটা লালরঙ্গের জ্যাকেট পাই। এই জ্যাকেটটা যাহাতে তাহাকে ফিরাইয়া দেওয়া হয়, তৰ্জ্জন্ত আসামী রুসো আমাদের বিস্তর অনুরোধ করে। সেই প্যাকেট পরীক্ষা করিতে গিয়া দেখি, জামার আস্তরের মধ্যে এক গুপ্তস্থানে, একটা গুলিভরা পিস্তল লুকান আছে। তাহার পর আমি রুসো ও অন্যান্য আসামীদের ধরিয়া ফেলি। অপহৃত মালপত্র আদালতে দাখিল করিয়াছি। জারানের জোবানবন্দী। এই ব্যক্তিও একজন আসামী। কিন্তু কোম্পানী-বাহাদুরের পক্ষে ইহাকে সাক্ষী করিয়া লওয়া হয়। জারান বলিল—“আমি হানোভার দেশের লোক। পনর বৎসর এই ভারতবর্ষে বাস করিতেছি। পাচ বৎসর, আমি মান্দ্রাজে একজন ইংরাজের চাকরী করিয়াছিলাম। তৎপরে আমি কলিকাতার আসি। কলিকাতাতেও আমার পাচ বৎসর কাটিয়াছে। কলিকাতায় টাইলার ও লেড লী সাহেবের বাটীতে চাকরী করিয়াছি। আমি আসামীদের সকলকে চিনি। আমরা সকলে মিলিয়া, চৈতনশীলের বাড়ী ডাকাতি করিতে গিয়াছিলাম। গত ২৭এ জানুয়ারি, মার্কস্ আমার কাছে আসিয়া বলে, তুমি রুসোর বাড়ী চল। একটা ডাকাতি করিতে হইবে । আমি তাহার সঙ্গে রুসোর বাটতে যাই। সেখানে-আরও নয়জন সাহেব ডাকাত উপস্থিত ছিল ; রাত্রি দশটার পর, মোহন পাল--(ঐ আসামী) আমাদের নিকট আসিয়া সংবাদ দিল—“আজ আর ডাকাতির কোনরূপ সুবিধা হইবে না বোধ হয়। কারণ এখনও তাহার বাটতে অনেক লোকজন জাগিয়া বসিয়া আছে।” সেদিন আর ডাকাতি করা হইল না। ২৯এ তারিখে, আবার আমরা রুসোর বাড়ী জমায়েত হই। মোহনপাল সেদিন রাত্রি বারটার সময়ে আসিয়া বলিল—“দল সব জমায়েত হইয়াছে ত? আজই বেশ সুযোগ।" তার পর মোহনপাল পটুগীজ ভাষায় আমাদের বলিল- “আমি আবার একবার সন্ধান লইয়া আসি—পথ পরিষ্কার কি না।” তার পর সে রাত্রি একটার সময় ফিরিয়া আসিয়া, আমাদের সকলকে সঙ্গে লইয়। চৈতনের বাড়ী উপস্থিত হইল ।