পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



৩৬
ভারতবর্ষে।

তৎক্ষণাৎ আমাদের সীমাবদ্ধ জীবনের সকল প্রতিবন্ধক দূর হইবে, আমরা পুনর্ব্বার অনাদি অনন্তস্বরূপে পরিণত হইব—যেখান হইতে আমরা আসিয়ছিলাম, সেইখানেই আবার ফিরিয়া যাইব। এবড় অদ্ভূত ব্যাপার, কুত্রাপি এ কথা শুনা যায় না যে, কর্ম্মে মুক্তি নাই, বিশ্বাসে মুক্তি নাই, ভাবে মুক্তি নাই, ক্রিয়াকলাপে মুক্তি নাই, পরন্তু জ্ঞানেই মুক্তি। ‘যাহাদিগের চরিত্র বিশুদ্ধ, যাহারা বেদ পাঠ করে, যজ্ঞানুষ্ঠান করে, মৃত্যুর পরে তাহারা দেব-লোক গমন করে, কিন্তু তাহাদিগের সঞ্চিত পুণ্য শেষ হইয়া আসিলে, তাহারা আবার ইহলোকে ফিরিয়া আইসে, কারণ, তাহারা সত্যকে জানে না। তাহারা নূতন আকারে জন্মগ্রহণ করে, আবার কামনা করে, ইচ্ছা করে, কর্ম্ম করে, অনুভব করে, জীবন ধারণ করে। ... ... ... যে ব্যক্তি ব্রহ্ম ও জগতের মধ্যে প্রভেদ দেখে, সে পরিবর্ত্তন হইতে পরিবর্ত্তনে, মৃত্যু হইতে মৃত্যুতে উপনীত হয়।’ অর্থাৎ তাহাদিগের পুনঃ পুনঃ জন্ম হয়। চিরশান্তি লাভ করিতে চাও ত নিঃশ্বাসকে রুদ্ধ কর, চিত্তকে একাগ্র কর, ইন্দ্রিয়গণকে নিগ্রহ কর—বাক্যকে স্তম্ভিত কর। তালুদেশে জিহ্বাগ্র চাপিয়া রাখ, ধীরে ধীরে শ্বাস ত্যাগ কর, আকাশে কোন বিন্দুর উপর লক্ষ্য স্থির কর; তাহা হইলে চিন্তা রহিত হইবে, চেতনা বিলুপ্ত হইবে, আমিত্ব ঘুচিয়া যাইবে। ‘সুখদুঃখ আর অনুভব হইবে না, পরে প্রশান্তি ও কৈবল্যে উপনীত হইবে।’ আত্মা যখন পরমাত্মাকে চিনিতে পরিবে তখন আর তাহার আকাশ থাকিবে না, কাল থাকিবে না, সংখ্যা থাকিবে না, সীমা থাকিবে না, গুণ থাকিবে না। ‘লূতাতন্তু যেরূপ আপনার তন্তু অবলম্বন করিয়া মুক্ত আকাশে উত্থিত হয়, সেইরূপ যেব্যক্তি ওঁকার অবলম্বন করিয়া ধ্যান করে সে মুক্তিলাভ