পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



ব্রাহ্মণ্যশাস্ত্রের মায়াবাদ ও অদ্বৈতবাদ।
৩৯

হিন্দু বুদ্ধি ও হিন্দু কল্পনা—এই দুই ধাপের মধ্যে একটি ধাপে তিনি পৌঁছিয়াছেন মাত্র। সেটি কল্পনার ধাপ। তিনি বৈদিক কবির স্বপ্নোচ্ছ্বাস, আনন্দোচ্ছ্বাস পর্য্যন্ত পৌঁছিয়াছেন; কিন্তু হিন্দু দাৰ্শনিকের লয়তত্ত্বে পৌঁছেন নাই। তাঁহার অদ্বৈতবাদে বিশ্ব-প্রাণের উচ্ছ্বাস আছে, নির্ব্বাণ নাই। তাঁহার অদ্বৈতবাদ সুস্থ ও সবল।

 “‘আমিয়েল’ আর একটি অপেক্ষাকৃত পূর্ণাবয়ব দৃষ্টান্ত। ইনি সগুণ জীবন্ত ব্রহ্মকে ভেদ করিয়া আরও একটু ভিতরে তলাইয়াছেন। ইনি ব্রহ্মের শান্তস্বরূপে প্রবেশ করিয়া নিস্পন্দ অসাড় হইয়া পড়িয়াছেন; মুক্ত হইয়াছেন। ... ... হিন্দুর নিশ্চেষ্টতা, হিন্দুর বৈরাগ্য, হিন্দুর মায়াবাদ, ইচ্ছা ভাব ও বুদ্ধির এই যে তিন ধাপ, ইনি এই তিন ধাপই মাড়াইয়া আসিয়াছেন। ইনি আপনাকে ব্রাহ্মণদিগের ভ্রাতা বলিয়া স্বীকার করেন। ‘ভারতবর্ষীয় যোগীর ন্যায় আমার আত্মা মায়ার দোলায় আন্দোলিত; আমার নিকট সকলই, এমন কি, আমার নিজের জীবন পর্য্যন্ত, ধূম, বিভ্রম, ও বাষ্পবৎ। এই সকল বিষয়রাশি আলোকের ন্যায় আমার উপর দিয়া চলিয়া যায়, কোন পদচিহ্ন রাখিয়া যায় না—তাহার উপর আমার অল্পই আস্থা। চিন্তা অহিফেনের স্থান অধিকার করিয়াছে; চিন্তা সকলকে উন্মত্ত করিতে পারে, সকল পদার্থকে, এমন কি পর্ব্বতকেও অন্তর্ভেদী স্বচ্ছতা প্রদান করিতে পারে।’ ... ... ... ‘প্রত্যেক সভ্যতা, যুগযুগান্তের স্বপ্নস্বরূপ; ইহাতে আকাশ, পৃথিবী, প্রকৃতি ইতিহাস একপ্রকার অদ্ভুত বিচিত্র আলোকে প্রকাশ পায় এবং বিভ্রম-অভিভূত আত্মার প্রলাপ-নাটকের অভিনয় হইয়া থাকে।’ ... ... ‘উপছায়াকে যেরূপ দেখিতে পাওয়া যায়, ধরিতে পারা যায় না, আমি সেইরূপ উপছায়ার ন্যায় তরল পদার্থ। ... ... না মরিয়াও আমি প্রেতের ন্যায়। অন্য সকলে আমার নিকট স্বপ্নের