পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

যাচ্ছে, সমস্তই দিব্য দৃষ্টিতে পরশ ও পরখ করে নিলে মানুষ। দর্শকের ও শ্রোতার জায়গায় বসে মানুষ দেখবার মতো করে দেখলে, শোনবার মত করে শুনে নিলে নিখিলের এই রূপের লীলা সুরের খেলা, এবং এরও ওপরে যে লীলাময় মানুষকে সমস্ত পদার্থ সমস্ত বস্তুর সঙ্গে একসূত্রে বেঁধে একই নাট্যশালায় নাচিয়ে গাইয়ে চলেছেন তাঁকে পর্যন্ত ছুঁয়ে এল মানুষ নেপথ্য সরিয়ে। দেখা শোনা পরশ করার চরম হয়ে গেল, তারপর এল দেখানোর পালা। মানুষ এবারে আর এক নতুন অদ্ভুত অনিয়ন্ত্রিত অভূতপূর্ব সৃষ্টি সাধন করে গুণী শিল্পী হয়ে বসলো। এই দৃষ্টিবলে আপনার কল্পনালোকের মনোরাজ্যের গোপনতা থেকে মানুষ নতুন নতুন সৃষ্টি বার করে আনতে লাগলো। যে এতদিন দর্শক ছিল সে হল প্রদর্শক, দ্রষ্টা হয়ে বসলো দ্বিতীয় স্রষ্টা। অরূপকে রূপ দিয়ে, অসুন্দরকে সুন্দর করে, অবোলাকে সুর দিয়ে, ছবিকে প্রাণ, রঙ্গহীনকে রং দিয়ে চল্লো মানুষ—

“প্রেমের করুণ কোমলতা 
ফুটিল তা’
সৌন্দর্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে॥”