পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শিল্পবৃত্তি
১৯১

একটি মাত্র রূপ সে রেখায় লতায় পত্রে পুষ্পে ভরে উঠলো। আদিম শিল্পের রংএর হিসেবও এইরূপে ছড়ার মধ্যে ধরা রয়েছে নিখুঁতভাবে ; যথা— “এপারেতে কালে রং বিষ্টি পড়ে ঝম্ ঝম্‌ ওপারেতে লঙ্কা গাছটি রাঙ্গ টুক্ টুক্‌ করে ।” যেন নীলাম্বরী সাড়ির কিমাবুtয় চওড়া রাঙ্গ পাড়ের টানটোন । অথবা— ‘রং নয়তে কঁাচ সোনা, মুখটি যেন চাদের কোণ !” কিংবা— “কে বলেরে অামার গোপাল বেঁচে। মুখ সায়রের মাটি এনে নাক করেছি সোজা ; কে বলেরে গোপাল আমার কালে। পাটনা থেকে হলুদ এনে গা করেছি আলো ।” ছেলেবেলায় যে সব মাটি ও কাঠের পুতুল নিয়ে সবাই খেলেছি তার বিশেষত্বই ছিল—আলো করা হলুদ রঙ এবং একবারে ঠিক সোজা নাক, কালো কাপড়ের কিনারায় রাঙ্গ টুক টুকে পাড়, রঙ রেখার পরিষ্কার টানটোন ! রঙএর দিকে এবং রেখার দিকে শিল্পীর সহজ ও প্রবল প্রবৃত্তি, এরি উপরে মানুষের শিল্পের পৱন হ’ল এবং এই উৎস যখন ধারা ধ’রে বইতে আরম্ভ করলে তখন শিল্পের যৌবন অবস্থা ধরা যেতে পারে। এই যৌবন অবস্থায় নদীর স্রোতের মতো মানুষের শিল্পে মনোভাব প্রকাশের প্রবৃত্তি, রঙ দেবার প্রবৃত্তি, রেখা টানার প্রবৃত্তি, স্তরে বলার ছন্দে বলার প্রবৃত্তি আর উচ্ছ,স্থল নেই, একটা একটা ধারা ধরে সুসংযত হয়েছে, অবাধ সুন্দর বাক ও তট-রেখার মধ্য দিয়ে ঝিকমিক্‌ করে’ ব’য়ে চলেছে, ভাবের এবং রসের গভীরতা লাভ করতে করতে। তখন শুধু বর্ণের জন্যই বর্ণ নয়, রেখার জন্যই রেখা নয়, এমন কি বলতে পারি কেবল আর্টের জন্মই আর্টও নয়—মানুষের সকল প্রবৃত্তি ধম ও কম কে এনে একসঙ্গে মিলিয়েছে, বাইরের দেখার সঙ্গে অস্তরের দেখার মিলন হয়ে গেছে, মুরের সঙ্গে শাল বোনার কায চলেছে, দেবতার আরতি ঘোষণা করেছে অষ্টধাতুর ঘণ্টা, মন্দিরের বাইরের বিচিত্র কারুকার্য অস্তরের