পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শিল্পবৃত্তি
২০১

সম্ভাবিতাঃ দিল্লীবল্লভ-পাণিপল্লবতলে নীতং নবীনং বয়ঃ"।” নব যৌবন পাওয়ার কথা দেশ বাক্য দিয়ে লেখা দিয়ে কত ছন্দে কত সাজে কত স্বরে বলে গেল যুগে যুগে কতবার। প্রতি বসন্তে গাছ যেমন করে জানিয়ে যায় বছরে বছরে তার ফুল ফোটার ফল ধরার ইতিহাসু, তেমনি জানিয়ে গেল দেশের শিল্প এই পরিণয়-কাহিনী পাষাণের অক্ষর দিয়ে । পূবে পশ্চিমে এমনি মিলন আকাশপটে সোনার অক্ষরে লেখার সময় এখনে এসেছে কি না ঠিক বলা যায় না, কিন্তু এই অন্ধকার রাত্রির মধ্যেও বিদ্যুল্লেখায় সুস্পষ্ট পড়৷ যাচ্ছে—শিল্প" বল, সভ্যতা বল, ধম বল, কম বল, সবই জীবন থেকে রস টেনে তবে বাচে। গাছ মিল্লেী উপযুক্ত মাটিতে, পাতা পেলে বসন্তের আলো বাতাস, তবেই কালে তাতে ফুল ফুটলো ফল ধরলে নব যৌবন পেলে পুরোনো শাখা । দুই ভিন্ন জাতি যেখানে জল আর মাটির মতো মিলেছে সেই গভীরতার মধ্যে জগতের শিল্প শিকড় নামিয়ে দিয়ে বেঁচে থাকে ; মরুভূমিতে যেখানে না আকাশের জল, না সমুদ্রের জল মিলতে পারলে মাটির সঙ্গে, কোন শিল্পের কোন ফুল সেখানে ফোটা সম্ভব হ’ল না। আকাশ বর্ষণে প্রবৃত্ত হ’ল, পাত্র নেই জলকে ধরার, কিংবা ধূলো উড়ে উড়ে আকাশের কাছে রস চাইলে, উপর থেকে তপ্ত বাতাস ছাড়া আর কিছুই এল না—এ হ’লে পুথিবী নিষ্ফল অপ্রফুল্ল রইলো। শিল্পের উৎপত্তির কথাও এই । চোখে দেখি মরুভূমির পারে আকাশ সে মিলছে, এ শুধু চোখের ভুল, এ মিলন শুধু মরীচিকারই সৃজন করে থাকে, যাকে ভুল করে অনেকেই সত্য, সুন্দর ও মঙ্গলজনক শিল্প বলে । বাদলের মেঘ সঙ্গে ঝড় ঝাপটা আনে বটে কিন্তু বর্ষণ যখন সুরু হ’ল তখন পৃথিবী আর আকাশের মধ্যে অগণিত যোগসূত্র রচনা হ’য়ে গেল, ফল্লো তবে ফসল, কিন্তু শিলাবৃষ্টি নামলো দূর আকাশ থেকে, ছভিক্ষ উপস্থিত হ’ল পৃথিবীর বুক জুড়ে । মধুকর এল, এ ফুলে ও ফুলে বিয়ে দিয়ে গেল, ফলের ফুলের শোভায় বাগান ভর্তি হ’ল, পঙ্গপাল এল মেঘের মতো বটে কিন্তু দুৰ্ভিক্ষই বর্ষণ করে গেল চারিদিকে । শুধু ভারতবর্ষ নয় সব দেশের শিল্পই এমনি এক একটা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। একটা থেকে অার একটাতে যাবার মধ্যের পথে এই সব সঙ্কট দেখা দেয়, যে সময় পরিবতনের তাড়া বাড়ীওয়ালার O. P. 14-26