পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৪০
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

ডানা বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়—ঘরের প্রদীপ আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র খেলাঘরের মাটির পুতুল ঠিকানা পেতে চায়; খেলুড়ির এ ওকে শোধায়— “ভোর বেলা যে খেলার সাথী ছিল আমার সাথে, মনে ভাবি তার ঠিকানা তোমার জানা অাছে।” খেলুড়ির রাজা হ’ল মানবশিশু—নটরাজ সে, নিজে নাচে বিশ্বকে নাচায় । বিশ্বরাজের লীলা-সহচর রূপ সমস্ত–চন্দ্র সূর্য জীব জন্তু ফুল পাতা মেঘ বৃষ্টি—তারা সবাই এই খেলুড়ির রাজা মানবশিশুকে চিনলে, ঘিরে ঘিরে’ বল্পে তাকে—“হাসি কাদি যেমন নাচাও তেমনি নাচি । মায়ের কোলে ধরা সেই মাটির ঘরের খেলুড়ি ছেলে মেয়ে দুটিতে ভোলে সে খেলনা পেয়ে। ফেলনা জিনিষ দিয়ে তৈরি হ’ল না সে সমস্ত খেলাঘরের হেলা-ফেলার পুতুল,—যে মাটিতে ভূমিষ্ঠ হয় প্রাণ, যে মাটিতে মাটি হ’য়ে মেশে প্রাণের পাত্র দেহ, সেই মাটিতে গড়া হ’ল পুতুলখেলার পুতুল। মাটির ঘরের ধারেই বাইরের খেলাঘরখানি পাতা, সেখানে আতা গাছে তোতাপাখী উড়ে বসে’ ডাকে—এস খোক খেলি এস । মা বলেন—যেও না খোকা । খোকা বলে—যাবো । খেলতে কঁাদে খোকা, ভোলানো শক্ত তাকে চাদমুখে রোদ লাগার ভয় দিয়ে। রোদও সে ডাকছে—গাছের পাতায় আলোর ফুলঝুরি জালিয়ে আর মাটি দিয়ে নিকোনো উঠোনের একটি ধারে আলো ছায়ার চাকাচাকা ফুল সাজিয়ে খেলো এসে খোকা । - বাইরের মাটির পুতুল তারা সব ডাক দেয় ঘরের পুতুলটিকে— হাতছানি দিয়ে ইসার করে কথা কয়ে’ গান গেয়ে । মন ভোলালে৷ ছেলের, সে এক মায়ের কোল ছেড়ে আর এক মায়ের ঘরে খেলতে ছুটলো বাইরে। সেখানে চলে ধরা-ছোয়ার খেলা জলে স্থলে ধরাতলে, মেঘে মেঘে আকাশতলে । খোকা চলে তুলতে আলো ছায়ার ফুল—তারা ছোয়া দেয়, কচি হাতের মুঠোয় আসে কিন্তু ধরা দেয় না। আকাশের পাখী ডাক দেয়