পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

প্রাতঃকালে তাঁহাকে সংবাদ দেওয়া হইবে স্থির হইয়া সে রাত্রির মত সভা ভঙ্গ হয়।

এই স্থানে শ্রীযুক্ত শ্যামা ঠাকুরাণীর একটু পরিচয় দিতে হইতেছে। তিনি এই গ্রামেরই কিশোরী ঘোষাল মহাশয়ের কন্যা। ঘোষাল মহাশয়ের যখন স্ত্রী-বিয়োগ হয়, তখন শ্যামা ঠাকুরাণীর বয়স আট বৎসর। ঘোষাল মহাশয় আর দারপরিগ্রহ না করিয়া মেয়েটীকেই প্রতিপালন করিতে থাকেন। দশম বৎসর বয়সে, তাঁহার যাহা সাধ্য তাহার ও অতিরিক্ত ব্যয় করিয়া শ্যামা বিবাহ দেন; কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ছয়মাস যাইতে না যাইতেই শ্যামা বিধবা হন; তাঁহাকে আর স্বামীর ঘর করিতে হয় না। সেই হইতে শ্যামা ঠাকুরাণী পিত্রালয়েই বাস করিতেছেন। বছর আট পরে যখন কিশোরী ঘোষাল মারা যান, তখন তিনি তাঁহার যে সামান্য জোত-জমা ছিল, তাহা বিধবা কন্যা শ্যামার ভরণ পোষণের জন্য লেখা পড়া করিয়া দিয়া যান। শ্যামার অবর্ত্তমানে ঘোষাল মহাশয়ের জ্ঞাতিদের মধ্যে যাহার আইন অমুসারে প্রাপ্য হইবে, তিনিই বিষয় পাইবেন।

সেই হইতে শ্যামা ঠাকুরাণী এই গ্রামেই বাস করিতেছেন। আমরা যে সময়ের কথা বলিতেছি, তখন শ্যামা ঠাকুরাণীর বয়স প্রায় ৬০ বৎসর; কিন্তু তাঁহাকে দেখিলে কেহ চল্লিশের উপর বলিয়া কিছুতেই মনে করিতে পারেন না। দশ বৎসর বয়সে বিধবা হইয়া এই পঞ্চাশ বৎসর কাল শ্যামা ঠাকুরাণী নিষ্কলঙ্ক জীবন যাপন করিয়া আসিতেছেন; সুবর্ণপুরের কেহ কোন দিন

৩৭