পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

কাহার কোন কথার মধ্যে নেই। কি বেইমান গো, এই গাঁয়ের লোকগুলো! এই যে এতদিন দিন নেই, রাত নেই, যে যখন বিপদে পড়েছে, যার যখন দরকার পড়েছে, তখনই এই শ্যামা বামণী না খেয়ে না দেয়ে একেবারে বুক দিয়ে পড়েছে, এ বুঝি তারই ফল। যাক্‌ আমি আর কারো কিছুর মধ্যে নেই। কারও বাড়ীও যাব না, কারও কোন কথাতেও থাক্‌ব না। আমি কি কারও খাই না ধারি যে, যে ডাক্‌বে তার বাড়ী যাবো। আজ থেকে নাকে-কাণে খত দিচ্ছি হরির মা! আমার পায়ে এসে মাথা খুঁড়লেও কারও উপকার করছিনে। এত হেনেস্তা, এমন অপমান।” শ্যামা ঠাকুরাণী এই বলিয়াই ঘরের মধ্যে চলিয়া গেলেন; হরি সরকারের মা প্রাঙ্গণে একটু দাঁড়াইয়া থাকিয়া আপন কাজে চলিয়া গেল।

শ্যামা ঠাকুরাণীর রাগও হইল, অভিমানও হইল; কিন্তু এত বড় একটা ব্যাপারে তাঁহাকে না ডাকিয়া, তাঁহার সঙ্গে পরামর্শ না করিয়া যে গ্রামের সকলে একটা কাজ করিয়া বসিল, ইহাতে মুখে তিনি যতই উপেক্ষা প্রদর্শন করুন না কেন, তাঁহার মনে কিন্তু বড়ই বাজিল। গ্রামের মধ্যে তাঁহার যে একাধিপত্য ছিল, তাহা এক কথায় ছাড়িয়া দিতে ত তিনি পারেন না; তাহা হইলে যে তিনি একেবারে দশজনের একজন হইয়া পড়িবেন; ভবিষ্যতে যে কেহই তাঁহাকে মানিবে না। সুতরাং এমন করিয়া সমস্ত সম্পর্ক ছাড়িয়া দিয়া সুবর্ণপুরে বাস করা তাঁহার পক্ষে একেবারে যে অসম্ভব। গ্রামের দশজনের দশ কথা, দশ ব্যাপার লইয়াই যে তিনি জীবনের এই সুদীর্ঘকাল কাটাইয়াছেন। তাঁহার আর

৪১