পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

গ্রন্থকারের নিবেদন

 ভারত-ইতিহাসের বর্ত্তমান সন্ধিক্ষণে নেতাজী সুভাষচন্দ্রের মত একজন পুরুষের আবির্ভাব কেমন করিয়া সম্ভব হইল ও তাহার কি প্রয়োজন ছিল, এই পুস্তকে তাহাই বুঝিবার ও বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছি। এ পর্য্যন্ত নেতাজীর জীবন-কথা, কীর্ত্তি ও চরিত্র সম্বন্ধে অনেক ছোট বড় পুস্তক বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় রচিত হইয়াছে, কিন্তু সে সকলের উদ্দেশ্য অন্যরূপ―তাহাতে, ইংরেজীতে যাহাকে ‘mission’ বলে,সুভাষ চন্দ্রের সেই mission বা তাঁহার জীবনের একমাত্র ব্রত নির্দ্দেশপূর্ব্বক, তাহারই আলোকে তাঁহার চরিত্র ও প্রতিভার ব্যাখ্যা কেহ করিয়াছেন বলিয়া বোধ হয় না। যে রাজনৈতিক রণক্ষেত্রে তিনি একরূপ অবিশ্রামে তাঁহার যোদ্ধৃ-জীবন যাপন করিয়াছিলেন, মুখ্যত তাহারই পটভূমিকায় তাঁহার সেই ব্রত ও তাহার সাধন-মন্ত্র বুঝিয়া লইতে হইবে; আবার, সকল দ্বন্দ্ব, সকল ঝড়-ঝঞ্ঝার ঊর্দ্ধে সেই পুরুষের যে মুক্ত-আত্মা, স্থিরদীপ্ত নক্ষত্রের মত নিঃসঙ্গ নৈঃশব্দ্যে আপনাতে-আপনি পূর্ণ হইয়া বিরাজ করিত, তাহার রহস্য-গভীর মহিমাও স্মরণ রাখিতে হইবে। কারণ, সুভাষচন্দ্রের মত পুরুষ কোন একটা ব্রত-পালনের দৃষ্টান্তই নহে―সে জীবন তদপেক্ষা মহত্তর ও গূঢ়তর সত্যের ইঙ্গিত-স্বরূপ।

 তাই, আমি সুভাষচন্দ্রের সেই সমগ্র পরিচয় আমার সাধ্যমত অতি সংক্ষেপে বিবৃত করিয়াছি। ব্যক্তিকে বুঝিবার জন্য, দেশ ও কালের পরিবেষ্টনী এবং জাতির পূর্ব্ব-সাধনার ধারাটিকে সর্ব্বদা সম্মুখে রাখিয়াছি, কারণ, সুভাষচন্দ্রও যে একটা জাতি ও যুগের মুখ্য প্রতিনিধি তাহাতে সন্দেহ নাই। সেই তথ্য ও তত্ত্বের আলোচনায় আমি, যতদুর সম্ভব ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য রাখিয়াই, জাতীয় চরিত্রের অন্তর্নিহিত প্রেরণাও