পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৸৴৹

করিয়াছি। দিলীপকুমারের বাচালতাই তাঁহার একরূপ প্রতিভা বলিলেও হয়; নানা বিষয়ে তাঁহার যে মতামত ও ভাবোচ্ছাস বাংলা ও ইংরেজীর মারফতে চতুর্দ্দিকে উড়িয়া ছড়াইয়া পড়ে তাহা যেমন বিচিত্র, তেমনই কৌতুককর। দিলীপকুমার অতিশয় সরল-হৃদয় ব্যক্তি, তাঁহার এই সরলতাই আমাকে মুগ্ধ করে; তাঁহার প্রাণমনের যত কিছু ভাবনা-কামনা তিনি অকপটে ব্যক্ত করিয়া থাকেন― একটুও আব্রু রক্ষা করিতে পারেন না। এই পুস্তকেই তিনি সেই ‘enfant terrible’ হইয়া নিজের সম্বন্ধেই একটা সত্যকথা কবুল করিয়া ফেলিয়াছেন। তিনি পণ্ডিত জবাহরলালের অনুরাগী―তার কারণ, জবাহরলাল সুভাষ অপেক্ষা সঙ্গীতপ্রিয়, তিনি সঙ্গীতকলার মর্য্যাদা বুঝেন। একদা দিলীপকুমারের গান তিনি শ্রদ্ধা ও মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করিয়াছিলেন—এজন্য দিলীপকুমার পণ্ডিতজীর প্রতি বড় কৃতজ্ঞ ও তাঁহার গুণানুরাগী―ইহা তিনি স্পষ্টতঃ স্বীকার করিয়াছেন। এমন আত্মপ্রীতি যাঁহার―সুভাষচন্দ্রকে সে-ও আত্মম্ভরী বলিয়া নির্দ্দেশ করে! যে হাস্যরসিক বিধাতার খেয়ালে সুভাষচন্দ্রের মত পুরুষের সহিত এই রস-সাধক আত্মবিগলিত পুরুষটির ঘনিষ্ঠ পরিচয় ঘটিয়াছিল, সেই বিধাতার পরিহাস তিনি বুঝিতে পারেন নাই; কারণ, ঐ বন্ধু আর তিনি এই দু’য়ের মধ্যে এক দুর্লঙ্ঘ্য সাগরের ব্যবধান আছে,―তাঁহার গুরু শ্রীঅরবিন্দের আসন যতই উচ্চ হউক। শিষ্য তাঁহারই জবানীতে সুভাষচন্দ্রের চরিত্র-বিচার করিতে পারেন না, কারণ সে-দৃষ্টি তাঁহার এখনও লাভ হয় নাই। দিলীপকুমারের ঐ পুস্তক পাঠ করিয়া মনে হয়, সুভাষচন্দ্রের প্রতি তাঁহার এই অনুকম্পা ও অসস্তোষের কারণ―সুভাষচন্দ্র পণ্ডিচেরীর আশ্রমে যোগাভ্যাস করিতে রাজী হন নাই, তিনি আধ্যাত্মিক রস-সাধনার মূল্য বুঝিতে চাহেন নাই। কিন্তু একথা