পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নব পুরুষ-সূক্ত
১৭

উপলক্ষ্য করিয়া, সুইনবার্ণ যেমন করিয়াছিলেন―আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে তাঁহার কবি-হৃদয়ের অর্ঘ্য নিবেদন করিবার জন্য। উভয় কবিতার মধ্যেই মানবাত্মার অপরাজেয় শক্তি ও মহিমা কীর্ত্তিত হইয়াছে। ইতিহাসের এক একটি পুণ্যক্ষণে যে মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান হইয়া থাকে―যে-যজ্ঞে সেই এক বিরাট-পুরুষ আপনাকে আহুতি দেন, যাহার হবির্গন্ধে ও মন্ত্রচ্ছন্দে যজমান আমরা সেই মহাপ্রাণের সঙ্গে আমাদের প্রাণ যুক্ত করিয়া অমৃতত্ব-লোভে অধীর হই―উভয় কবি সেই একই যজ্ঞের পুরুষ-সূক্ত রচনা করিয়াছেন। আমরা দেখিয়াছি, ইংরেজ কবি এই যজ্ঞের গূঢ় তাৎপর্য্য যেরূপ বুঝিয়াছেন তাহাতে ঐ আত্মাহুতি, ঐ মৃত্যুই অমৃতের সোপান―উহাই আত্মার পরম ধর্ম্ম; তিনি মৃত্যুকেই মহিমান্বিত করিয়াছেন, তাহাতে পুরুষ যজ্ঞের একদিক অতিশয় যথার্থরূপে প্রকাশ পাইয়াছে। রবীন্দ্রনাথ যে সূক্তটি রচনা করিয়াছেন তাহাতে মৃত্যু অপেক্ষা জীবনের কথাটাই বড় হইয়াছে―সেই পুরুষ আপনার বিরাট প্রাণ ক্ষুদ্রের মধ্যে বিলাইয়া দিয়া মৃতকে পুনরুজ্জীবিত করে, চারিদিকে মহাজীবনের সাড়া পড়িয়া যায়। এখানে মৃত্যুর চিন্তাই যেন নাই, একের তপস্যায় আর সকলের সর্ব্বভয়, সর্ব্ববন্ধন ঘুচিবে - প্রবৃদ্ধ জীবন-চেতনায় মৃত্যুর সংস্কার পর্য্যন্ত তিরোহিত হইবে। এ পুরুষের মুখে কেবল ইহাই শুনি―“আমার জীবনে লভিয়া জীবন জাগো রে সকল দেশ!” অতএব মূলে দুইটি এক হইলেও, রবীন্দ্রনাথের কবি-চিত্তে যাহার ছায়া