পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৪
জয়তু নেতাজী

উৎপীড়িত তাহাদের দুঃখ ও অপমান তিনি নিজেরই দুঃখ ও অপমান বলিয়া মনে করিতেন। মধ্যভারতে ভ্রমণকালে তিনি একদা এক মেথর-পরিবারে কয়েকদিন বাস করিয়াছিলেন। এইরূপ অতি-নিম্নশ্রেণীর মানুষের মধ্যেও―যাহারা সমাজের ভয়ে এমন ভীত ও সঙ্কুচিত―তাহাদের মধ্যেও, আত্মার অপূর্ব্ব শুচিতা দেখিয়া চমৎকৃত হইতেন―সঙ্গে সঙ্গে তাহাদের সেই দুর্দ্দশা দেখিয়া তাঁহার যেন শ্বাসরোধ হইত।”


 ঐ যে দুর্গত, আত্মভ্রষ্ট, মহাদুঃখী ভারতের জনসাধারণ, উহাদের মধ্যেই তিনি মানব-মহত্ত্ব আবিষ্কার করিয়াছিলেন―জীবের ভিতরে শিবকে দেখিয়াছিলেন। ইহাই দেখিবার জন্য তিনি পরিব্রাজকবেশে ভারতের সর্ব্বত্র ভ্রমণ করিয়াছিলেন। হিন্দু-মুসলমান, শূদ্র ও অন্ত্যজ, গৃহী ও সন্ন্যাসী, পণ্ডিত-মূর্খ, পতিত ও পুণ্যবান, সকলের মধ্যে তিনি সেই এক ভারতীয় ভাবের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করিয়া একটা বড় আশায় আশান্বিত হইয়াছিলেন। একদা এক রাজার সভায় এক নর্ত্তকীর গান শুনিয়া তিনি যেন নিজেও তাহার দ্বারা ভর্ৎসিত হইয়াছিলেন। মানুষ যে কোন অবস্থাতেই আত্মার শুচিতা হারায় না, সকল মানুষই যে শ্রদ্ধার যোগ্য, এ বিশ্বাস সত্ত্বেও একবার তিনি ঠকিয়াছিলেন―রাজপ্রাসাদে বাইজীর গান শুনিতে তাঁহার প্রবৃত্তি হয় নাই। বাইজী তাহা বুঝিতে পারিয়া সাধক-কবি সুরদাসের একটি গান এমন তন্ময় হইয়া গাহিতে লাগিল যে, স্বামীজী একেবারে অভিভূত হইয়া গেলেন। সেই পতিতা নারী গাহিতেছিল―