পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৪
জয়তু নেতাজী

বুঝিয়াছে বলিয়াই এখনও মোহগ্রস্ত হইয়া আছে। গান্ধীজীর এই ধারণার মূলে আছে সেই ঊনবিংশ শতাব্দীর মনোভাব। অর্থাৎ আমাদের তুলনায় ইংরেজ-চরিত্রের শ্রেষ্ঠতায় বিশ্বাস; দ্বিতীয় কারণ, তাঁহার সেই প্রাচীন ভারতীয় সংস্কার,―স্বাধীনতা বলিয়া পৃথক কোন বস্তু নাই; একটা বস্তুই আছে, তাহার নাম মুক্তি, তাহাও ব্যক্তির ব্যক্তিগত সাধনা―তাহা ঠিক রাষ্ট্রিক বা জাতীয় স্বাধীনতা নয়; মানুষ সেখানে স্বতন্ত্র। সামাজিক হিসাবে, লোকহিতব্রত বা দুঃখীর দুঃখমোচনই একমাত্র সত্যকর্ম্ম; জনসেবার দ্বারা যে চিত্তশুদ্ধি হয় তাহাই সেই মুক্তিলাভের সোপান। ইহাই তাঁহার হৃদ্‌গত বিশ্বাস। তিনি এখনও বুদ্ধ ও খ্রীষ্টের যুগে বাস করিতেছেন। যুগধর্ম্মের বশে মনুষ্য সমাজে যে সকল নূতন ব্যাধির প্রাদুর্ভাব হয়, এবং তাহার জন্য যে নূতন ঔষধের প্রয়োজন―তিনি তাহা স্বীকার করেন না, কারণ, তাঁহার মতে জগতেরও মূল ব্যাধি এক, তাহা আরোগ্য করিতে হইলে সেই এক শাশ্বত সনাতন ঔষধই যথার্থ।

 এই যে মনোভাব ইহার সম্যক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ এখানে সম্ভব নয়, আবশ্যকও নাই। তথাপি এখানে একটি অপেক্ষাকৃত সহজ ও সুবোধ্য কারণ নির্দ্দেশ করা অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। প্রত্যেক মানুষের যেমন জাতিগত, বংশগত ও সমাজগত সংস্কার আছে গান্ধীজীরও তাহা আছে; এবং যেহেতু তিনি অসাধারণ চরিত্র-শক্তিমান পুরুষ, সেই জন্য ঐ সকল সংস্কার তাঁহার মধ্যে পূর্ণমাত্রায় স্ফুরিত হইয়াছে। একে ভারতীয় সংস্কারের অধ্যাত্ম-