পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
জয়তু নেতাজী

নামক একটি অতিশয় উপাদেয় প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ইংরেজ-চরিত্রকে, দেশকালভেদে, দুই ভাগে ভাগ করিয়া কতকটা নিশ্চিন্ত হইতে পারিয়াছিলেন। আসল কথা, ইংরেজের স্বজাতি-প্রেম ও স্বধর্ম্মনিষ্ঠাই যেমন তাহার মহত্ত্বের হেতু, তেমনই, ভারত-অধিকার ও লুণ্ঠন-বৃত্তির হেতুও যে তাহাই,―এবং একটি যেমন গভীর, অপরটিও তেমনি দুর্দ্দমনীয় ও অপরিহার্য্য, ইহা আমরা বুঝিয়াও বুঝতে পারি না। আরও কারণ, পূর্ব্বে বলিয়াছি—ঐ ইংরেজের মাবফতেই বাঙালা এক নূতন দৃষ্টির অধিকারী হইয়াছিল, ইংরেজ-চরিত্রের সেই অপর দিকটি হইতে সে তাহার বিস্ময়-বিহ্বল দৃষ্টি কিছুতেই ফিরাইতে পারে নাই। ডেভিড হেয়ারের মত ইংরেজকে সে ভুলিতে পাবে না, Edwin Arnold-এর Light of Asia পড়িবার সময়ে সে তাহাকে তাহার আত্মার দোসর বলিয়া মনে করে। তাই বলিতেছিলাম, ইংরেজের মধ্যে যেটুকু মনুষ্যত্ব, এমন কি দেবত্ব ছিল, বাঙালীর মত আর কেহ তাহার পূজা করে নাই।

 এই পূজা করিয়াছিল বলিয়াই, ইংরেজ যাহাকে তাহার বাণিজ্যের বিনিময়-পণ্য করিয়াছিল, বাঙালী তাহাকেই পরমার্থের পাথেয়রূপে বরণ করিল। অবশেষে, ইংরেজ-গুরুর নিকটেই সে যে মন্ত্রদীক্ষা পাইয়াছিল―ইংরেজের ইতিহাস ও ইংরেজী সাহিত্যের সেই জ্ঞানাঞ্জন-শলাকায় তাহার চক্ষু ক্রমে উন্মীলিত হইতে লাগিল, তখন সেই ছলনাও সে বুঝিল। ইংরেজের সেই জাতিপ্রেম-মন্ত্রকে সে আপন ধর্ম্মে শোধন করিয়া,