পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
জয়তু নেতাজী

ছিলেন; সুভাষচন্দ্র ইহাকে জ্ঞানে নয়, ধ্যানেও নয়―তাঁহার নিঃশাসবায়ুরূপে পাইয়াছিলেন। এই প্রেম ভাব-সাধনার প্রেম নয়―ইহা বৈষ্ণবের বৃন্দাবন-বিলাস নয়, নিজ-মানসের নিভৃত নিকুঞ্জে ভাব-সম্মিলনের গোপন প্রীতিরস-ভুঞ্জন নয়। এ প্রেম শক্তিমান্ শাক্তের প্রেম, ইহার প্রীতি-মন্দাকিনী নিষ্কলুষ কর্ম্মধারায় অহরহ বেগবান্; ইহা আপনার মধ্যে আপন আত্মমুগ্ধ হইয়া থাকিতে পারে না—শক্তির জগতে নিজেকে প্রসারিত করিয়া, জীবনের অগ্নিক্ষেত্রে পুরুষ-যজ্ঞের বলিরূপে আপনাকে আহুতি দিয়া ধন্য ও কৃতার্থ হইতে চায়। সুভাষচন্দ্র যে-দেশে যে-যুগে, যে-জাতির মধ্যে জন্মিয়াছিলেন, তাহাতে সেই অগ্নিক্ষেত্র ও যজ্ঞবেদিকা পূর্ব্ব হইতেই প্রস্তুত ছিল। তিনি ছিলেন শাক্ত―বাঙালীর সন্তান, তাই সেই আত্মবলির জন্য একটি দেবীর প্রয়োজন ছিল;[১] ধ্যান-কল্পনা বা কবিত্বের দেবী নয়―একেবারে সাক্ষাৎ মৃন্ময়ী মূর্ত্তি। সেই মূর্ত্তিও গড়িয়া লইতে হয় নাই, পূর্ব্বগামী সাধকগণ তাঁহার জন্য গড়িয়া রাখিয়াছিলেন। সেই মূর্ত্তি―দেশমাতৃকার সেই ভূলুণ্ঠিত রাজরাজেশ্বরী-মূর্ত্তি

  1. তাঁহার বন্ধু দিলীপকুমার এই কথাই আর এক ভাষায় বলিয়াছেন:―
     “He could only thrill to India when the peninsula ceased to be a thing of clay and became invested with Divinity” (The Subhas I Knew P 79)
    এবং―
     “He died dreaming not of his family or defeats, nor even of the clouds that had so aften blurred his Vision―but of the sun he had dreamed from his boyhood, of faith and courage, that would free his great Goddoss, his Motherland”. (Ibid. P 75)