পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২০১

ইতিহাসে বিরল। কেবল প্রথম দিকে, একবারমাত্র তিনি সত্য-সত্যই কিছুদিনের জন্য সম্মুখ-সংগ্রাম হইতে সরিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন, কারণ তখনও কংগ্রেসে তাঁহার পূর্ণ-কর্ত্তৃত্ব স্থাপিত হয় নাই―সেই যখন ‘স্বরাজী’রা (দেশবন্ধু, মতিলাল প্রভৃতি) কংগ্রেসে আধিপত্য বিস্তার করিতেছিল। ক্রমেই যখন কংগ্রেসের মধ্যে একটা না একটা দল প্রবল হইতে লাগিল―এবং গান্ধী কিছুতেই তাহাকে সম্পূর্ণভাবে বশীভূত করিতে পারিতেছিলেন না, তখন সেই শেষবার, তিনি যে যোগদৃষ্টির পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহাতেই অতঃপর কংগ্রেস চিরদিনের মত তাঁহাকে দাসখত লিখিয়া দিল। তখন বামপন্থীরা বড় শোরগোল আরম্ভ করিয়াছে―বলে কিনা তাহারা পূর্ণ-স্বাধীনতা চায়, অর্থাৎ ব্রিটিশের সম্পর্ক রাখিবে না! ইহার মত ভয়ানক কথা গান্ধীর পক্ষে আর কিছুই হইতে পারে না। মাদ্রাজ ও কলিকাতা-কংগ্রেসের অধিবেশনে পর-পর সেই দাবী ক্রমেই উদ্ধত হইয়া উঠিতেছিল। সেই বিষম চক্রান্তে (ব্রিটিশের সহিত সম্বন্ধ ছিন্ন করার) যে দুইজন যুবা―দুইজনেই সমান জনপ্রিয় ও ধীশক্তিমান―একত্র মিলিত হইয়াছে, সেই জবাহরলাল ও সুভাষচন্দ্রকে দেখিয়া তিনি বড়ই চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছিলেন; এইবার বুঝি তাঁহার এত সাধনার, এত তপস্যার তরীখানি বানচাল হইয়া যায়! তখন তিনি তাঁহার সেই তীক্ষ্ণ যোগদৃষ্টির দ্বারা উভয়কেই উত্তমরূপে নিরীক্ষণ করিলেন―তাহাদের অন্তরের অন্তস্থল দেখিয়া লইলেন। দুইজনকেই চিনিলেন―চিনিয়া একপক্ষে নিশ্চিন্ত হইলেন। ইংরেজরাজশক্তিও এই দুইজনকে তেমনই চিনিয়াছিল,―চিনিয়া ইংরেজও যাহা করিয়াছে, গান্ধীও তাহাই করিলেন। গান্ধীও সুভাষ সম্বন্ধে আর কোন আশাই পোষণ করেন নাই; ব্যক্তিগতভাবে সুভাষকে তিনি যে চক্ষেই দেখিয়া থাকুন, তাঁহার সেই সংকল্প-সাধনের পক্ষে সে যে কতবড়