পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২০৯

বিনষ্ট হইত। তাই গান্ধী কিছুমাত্র ভুল করেন নাই; সুভাষচন্দ্রই তাঁহার সেই অভিপ্রায় বুঝিয়াও বুঝিতে চাহেন নাই। সেই অতিপ্রায় কি তাহা ক্রমেই স্পষ্ট হইতে স্পষ্টতর হইয়া উঠিতেছিল। সুভাষচন্দ্র গান্ধীর নীতি ও কর্ম্ম-পদ্ধতি দেখিয়া বারবার বিস্ময় ৰোধ করিয়াছেন। গান্ধী ইংরেজের সহিত সন্মুখ-যুদ্ধের অভিনয় মাত্র করিতেন, কখনও সত্যকার যুদ্ধে নামিতেন না; জনগণকে সে বিষয়ে পূর্ণ-উদ্যত করিয়া তৎক্ষণাৎ একটি মন্ত্রের দ্বারা সেই যুদ্ধোদ্যম নিবারণ করিতেন, সব ঠাণ্ডা করিয়া দিতেন,―ইহা সুভাষচন্দ্র লক্ষ্য করিয়াছেন, কিন্তু তাহার অর্থ স্পষ্ট করিয়া প্রকাশ করিতে পারেন নাই। বারদোলির যুদ্ধোদ্যম কেমন করিয়া ‘চৌরিচৌরা’র অজুহাতে নিবারিত হইয়াছিল তাহা ভারতবাসী বোধ হয় এখনও ভুলে নাই; “গুরুর ইচ্ছা পূর্ণ হউক” বলিয়া সকলেই নিঃশ্বাস ফেলিয়াছিল। এমনই এক একটা বেতালা দুঃসাহসের ভঙ্গি করিয়া গান্ধী প্রতিবারেই কেমন তাল সামলাইতেন, সুভাষচন্দ্র তাহা অতিশয় দুঃখের সহিত উল্লেখ করিয়াছেন। এইরূপ তাল-সামলানো শেষবারে বড় বিসদৃশ হইয়া উঠিয়াছিল। দ্বিতীয় গোল-টেবিল বৈঠক হইতে যখন তিনি হতাশ্বাস, এমন কি, হত-সম্মান হইয়া ফিরিলেন, এবং লর্ড উইলিংডনের সেই অগ্নি-মূর্ত্তি দেখিলেন, তখন ব্রিটিশকে ভয় দেখাইবার, ও জনগণের নিকটে মুখ-রক্ষা করিবার জন্য তিনি যে কৌশল অৰলম্বন করিয়াছিলেন, তাহার মত হাস্যকর ও শোকোদ্দীপক কিছু পূর্ব্বে কখনো করিতে হয় নাই। তিনি পুনরায় সেই বারদোলি-অস্ত্র ত্যাগ করিলেন; কিন্তু যুদ্ধ-ঘোষণার পরে যখন দেশের সর্ব্বত্র সেই যুদ্ধ চলিতে লাগিল, এৰং একদিকে জনগণও হটিবে না, অপরদিকে গৰর্ণমেণ্টও তাহাদিগকে দমন করিতে কিছুমাত্র ক্লান্ত হইতেছিল না, তখন গান্ধী প্রমাদ গণিলেন। এবার “চৌরিচৌরা” ছিল না, কাজেই একটি অভিনব

 ১8