পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২২১

পরাজয়ের দ্বারাই স্বাধীনতা-লাভ হইয়াছে। বিড়াল কাঠের বিড়াল হইলেও ক্ষতি নাই―ইঁদুর ধরিতে পারিলেই হইল; খুব বড় ইঁদুরই ধরিয়াছে!

 ইহার পর ব্রিটিশের আর বিশেষ বেগ পাইতে হয় নাই―কংগ্রেসের দৌড় তাহারা বুঝিয়া লইয়াছিল। তাই এক নূতন ভারত-শাসনতন্ত্র, নিজেদের প্রয়োজন মত প্রস্তুত করিয়া, কংগ্রেসকে তাহা গলাধঃকরণ করাইল, ভারতে বাদ্যভাণ্ড সহকারে কংগ্রেস-রাজ প্রতিষ্ঠিত হইল। তারপর মান-অভিমানের পালা আরও কিছুদিন চলিল, এমন সময়ে সহসা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ আরম্ভ হইয়া গেল। সেই যুদ্ধকালে কংগ্রেস একটা বড় চাল চালিতে গিয়া বানপ্রস্থ অবলম্বন করিল; শেষে সেই কাঠের বিড়াল কেমন করিয়া স্বাধীনতা-ইঁদুর ধরিল―গান্ধী-কংগ্রেসের সেই শৌর্য্যবীর্য্য―সেই খদ্দর, অহিংস ও হরিজন-সেবার চাপে পড়িয়া ব্রিটিশসিংহ কিরূপ জব্দ হইয়া ভারতরাজ্য তাড়াতাড়ি ত্যাগ করিয়া গেল, তাহা আমরা সকলেই জানি―সুভাষচন্দ্র তাহা দেখিয়া যাইতে পারিলেন না। এইরূপ স্বাধীনতা-যুদ্ধ যেমন জগতের ইতিহাসে অতুলনীয়, তেমনই এমন স্বাধীনতাও পূর্ব্বে কোন জাতি লাভ করিতে পারে নাই। কিন্তু এ সকল কথা সুভাষচঞ্জের গ্রন্থে নাই―তিনি কেবল গান্ধীর রণ-কৌশল এবং গান্ধী-কংগ্রেসের অমিত পরাক্রমের কাহিনীই লিপিবদ্ধ করিয়াছেন।

 এইবার গান্ধীর “স্বাধীনতা” এবং তাঁহার ধর্ম্ম ও কর্ম্মনীতি বুঝাইবার সময় আসিয়াছে, সুভাষচন্দ্রের গ্রন্থ হইতে আমি এপর্য্যন্ত যাহা উদ্ধৃত করিয়াছি তাহা হইতেই আশা করি, তাহা কতকটা হৃদয়ঙ্গম হইবে।