পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৩৫

পরিত্রাতা অবতার-কল্প ধর্ম্মগুরুরূপেই পূজা করিতেছে। দীর্ঘ দশ বৎসর তিনি যে কংগ্রেস-তরণীর পরিচালনা করিয়াছিলেন―ইহাই সেই নেতৃত্বের সর্ব্বোত্তম পুরস্কার। সমুদ্রতরণে তরণীর কর্ণধার হইয়া তিনি কিছুই করিতে পারিলেন না, শেষে সেই তরণী বানচাল হইয়া ডুবিয়া গেল। কিন্তু কর্ণধার ডুবিলেন না; পরন্তু সেই জলতল হইতে একটি মহাৰ্ঘ মুক্তা কুড়াইয়া পাইলেন―ত্রিশ কোটি ভারতবাসীর সেই গুরুপদ। তখন সেই মুক্তাটি হইল তাঁহার রাজ-সম্পদ্, তাহা দিয়া তিনি আর এক রাজ্যের রাজপদ অধিকার করিবার জন্য ব্যগ্র হইয়া উঠিলেন; ভারতের স্বাধীনতা, ব্রিটিশের সহিত বন্ধুত্বের দাবা-খেলা বা ভারতবাসীর আশু দুঃখ দুর্দ্দশামোচন―এসকল অপেক্ষা একটি মহত্তর সংকল্প তাঁহার চিত্ত অধিকার করিল, তিনি এক নূতন ধর্ম্ম প্রচার করিয়া জগৎগুরু হইবেন। সেইরূপ ধর্ম্মগুরু হইবার পক্ষে ঐ ভারতবাসী জনগণই তাঁহার সহায় হইবে; অহিংসা যে কতবড় ধর্ম্ম এবং তাহা মানুষের পক্ষে কিরূপ সহজসাধ্য―আত্মত্যাগের সেই মহাশক্তি ঐ ধর্ম্মে কিরূপ বিকাশ লাভ করে―তাহাই প্রমাণ করিবার জন্য তিনি তাঁহার সেই ভারতব্যাপী শিষ্যসমাজকে―সেই বিশাল গড্ডলিকাকে―দলে দলে আত্মপ্রাণ উৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিলেন। সুবিধাও হইল, ভারতের আর এক বৃহৎ সম্প্রদায় ঐ অহিংসার বিপরীত মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হইয়া দিকে দিকে রক্তস্রোত বহাইতে লাগিল―কাজেই অহিংসার নামে প্রাণদান করা সকলের পক্ষে দুঃসাধ্য হইল না। যাহারা বলির পশুর মত দলে দলে হত হইতে লাগিল, তাহার নিতান্তই দুর্ব্বল ও অসহায়; যাহারা শক্তিমান্ ও নির্ভীক তাহারা হিংসার পাপে লিপ্ত হইবার ভয়ে সেই শত শত অসহায়, প্রাণভয়ে ভীত নর-নারীকে বাঁচাইতে চাহিল না, বরং মরিতে ভয় পাওয়ার জন্য তাহাদিগকে ভীরু কাপুরুষ বলিয়া গালি