পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৮
জয়তু নেতাজী

সুভাষচন্দ্রও কয়েকবার উল্লেখ করিয়াছেন। ঐ আলোক বা অন্ধকারদর্শন, এবং ‘Voice of God’ বা ভগবানের প্রত্যাদেশ―উহাই জনগণের সকল বুদ্ধি ও বিচারশক্তিকে অনাবশ্যক করিয়া তুলিয়াছিল, সারাভারত রাজনৈতিক চেতনা-বর্জ্জিত হইয়া অহিংসা ও চরকার মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়াছিল। উহাতে ব্রিটিশেরই জয়লাভ হইল; কারণ জনগণের পরিবর্ত্তে তাহারা কয়েকজন ব্যক্তিকে মাত্র হাতে পাইল―গান্ধীর সেই অনুচর কয়েকটিকে ইতিমধ্যে তাহারা উত্তমরূপে বাজাইয়া লইয়াছে―উহাদের প্রার্থনা পূর্ণ করা আদৌ অসম্ভব হইবে না; উহারা ব্রিটিশের অভিভাবকতায় ডোমিনিয়ন-ধরণের রাষ্ট্রিক অধিকার চায়। সেই অধিকার জনগণের নামেই বটে; কিন্তু কার্য্যতঃ তাহারা এবং তাহাদের অনুগ্রহভাজন কয়েকজন মিলিয়া ব্রিটিশের তাঁবেদারী করিয়া কিঞ্চিং প্রভূত্ব, প্রতিপত্তি ও সুখভোগের ভিখারী। মুখে যত বড় বড় কথাই বলুক, তাহাদের অন্তরের সেই কামনা ব্রিটিশ রাজনীতি-ধুরন্ধরগণের চক্ষে জলের মত স্বচ্ছ হইয়া উঠিয়াছিল। এইরূপ যথন অবস্থা, তখন সহসা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ আরম্ভ হইয়া গেল, এবং তাহার ফলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যই একটা বিষম ধাক্কায় উল্টাইয়া গেল। আমরা দেখিয়াছি, কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ বা অহিংসা-যুদ্ধ তাহার বহু পূর্ব্বেই ধোঁয়া হইয়া গিয়াছে―ব্রিটিশ রাজশক্তি তাহার মেরুদণ্ড ভাঙ্গিয়া দিয়াছে। কেবল গান্ধীর প্রতি সেই অন্ধভক্তির বন্ধন কংগ্রেস তখনও একটা ভিন্ন আকারে জীয়াইয়া রাখিয়াছে; ঐ একটা দলই জনগণের নায়কতা বা প্রতিনিধিত্ব করিতেছে―সে প্রতিনিধিত্ব যেমনই হোক। রাজনীতির ঠাটটাই বজায় ছিল, ব্রিটিশের সঙ্গে কোন রকম রফার সুযোগ ঘটিলে ঐ কংগ্রেসই তখন জনগণের নামে তাহা করিতে পারিবে। ঐ যুদ্ধের সুযোগে গান্ধী-কংগ্রেস আর একবার যে রাজ-