পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫২
জয়তু নেতাজী

এখনও হয় নাই; সেই পুরাতন ধর্ম্মভাব, অর্থাৎ অন্ধভক্তিই তাহাদের একমাত্র সম্বল। রাজনৈতিক সংগ্রামেও ধর্ম্মগুরু এবং অন্ধভক্তি এই দুইয়ের বিষময় ফল ফলিতে আরম্ভ করিয়াছে,―বুদ্ধি, বিচার চিন্তা ও জ্ঞানকে সম্পূর্ণ নির্ব্বাসিত করিয়াই জনগণকে ষে এক-নেতৃত্বের বন্ধনপাশে বদ্ধ করা হইয়াছিল, সেই বন্ধনই এখন স্বাধীনতারও বন্ধন হইয়া উঠিয়াছে। এ জাতি স্বাধীন হয় নাই―হয় নাই যে, সে জ্ঞানও নাই, কারণ, স্বাধীনতা যে কি বস্তু তাহাই জানে না।

 দ্বিতীয় কারণ, নেতাজীর ব্যক্তি-মহিমা―তাঁহার বীর-কীর্ত্তি ও অপূর্ব্ব আত্মোৎসর্গই তাহাদিগকে ভাবাকুল করিয়াছে; নেতাজীর সেই আদর্শ বা মন্ত্র―তাঁহার সেই ব্রত―তাহারা এখনও ভালো করিয়া অবধারণ করিতে পারে নাই। যাহাতে সিদ্ধিলাভের জন্য তিনি সেই অমানুষিক তপশ্চরণ করিয়াছিলেন তাহা না বুঝিয়া, কেবল তাহারা তাঁহাকেই দেখিয়াছে, সেই কীর্ত্তিকলাপের রশ্মিচ্ছটায় তাঁহার মূল ব্রতটি আচ্ছন্ন হইয়া আছে। জনগণ যদি তাঁহার সেই মন্ত্র এবং সেই ব্রতটিকে বুঝিতে পারিত, তবে আজিকার এই স্বাধীনতালাভে তাহারা কৃতার্থ হইত না: কারণ, তাহা হইলে ইহাও বুঝিতে পারিত যে, এইরূপ স্বাধীনতাকেই নেতাজী বড় ভয় করিয়াছিলেন। এই কথা যাহারা এখনও বুঝে নাই, যাহারা কেবল তাঁহার আত্মোৎসর্গের সেই দিব্যাবদান দেখিয়া হৃদয়ের ভাবাবেগ সম্বরণ করিতে পারে না, তাহারাই আজ এইরূপ চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে; কিন্তু তাহারাই আবার,―যে মহা-বিপদ নিৰারণ করিবার জন্য নেতাজী প্রাণান্তিক প্রয়াস করিয়াছিলেন,― সেই বিপদকেই মহাসম্পদ মনে করিয়া কৃতার্থ হইয়াছে। ইহার মত পরিহাস আর কি হইতে পারে?

 আজ পণ্ডিত জবাহরলাল নেহেরুই ভারতের রাষ্ট্রনেতা,―সেই