পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 গোবিন্দ দাসের করচা অভিযোগের উত্তর পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে গোবিন্দ দাসের করচাকে উড়াইয়া দিবার জন্ত ইহাকে যেরূপ তোপের মুখে ফেলা হইয়াছে যে কোন ঐতিহাসিক দুর্গ তাহাতে ধ্বস্ত বিধ্বস্ত হইতে পারিত। প্রত্যেকটি ছত্র লইয়া চুল চেরা বিচার ও তর্কবিতর্ক। যে কোন বিবরণীকে এ ভাবে আক্রমণ করিলে তাহাকে পাড়িয়া ফেলা যায় ; কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে এই তোপের মুখটা একটু ঘুরাইয়া ধরিয়া গোড়া বৈষ্ণবদের প্রামাণিক গ্রন্থ সমূহের উপর লক্ষ্য সন্ধান করিলে তাহারা একদিনে উড়িয়া যাইত। সোয়া চারিশত বৎসর পূৰ্ব্বের কথা, সুতরাং অভিযোগগুলি অনেকই শুধু কল্পনা ও অম্বুমানের উপর দ{ড়াইয়া আছে। এই অভিযোগগুলির কয়েকটি নিতান্ত হাস্তাম্পদ। যাহার করচার প্রথম সংস্করণের একান্ন পৃষ্ঠা পৰ্য্যস্ত জাল মনে করিয়াছিলেন, তাহাদের মধ্যে জনৈক বিখ্যাত ব্যক্তি ৪১ • গৌরাঙ্গাব্দের কাৰ্ত্তিক মাসে ঐবিষ্ণুপ্রিয়া পত্রিকায় এইরূপ অভিযোগ করিয়াছেন। ১। করচায় লিখিত আছে যে গোবিন্দের পেট ফুলিলে চৈতন্যপ্ৰভু তাহার দেহে শ্ৰীহস্ত বুলাইয়াছিলেন। অভিযোগকারীর মতে ইহা সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্ত। যেহেতু চৈতন্যদেব স্বয়ং ভগবান। তিনি একটি হীন ভূত্যের দেহে হস্ত বুলাইতে যাইবেন, ইহা অসম্ভব। ২ । করচাতে লিখিত আছে ( অভিযোগকারীর মতে ) যে কাশীমিত্রের বাড়ীতে “প্রভু উদর পূৰ্ত্তি করিয়৷ থাইলেন।” কিন্তু “উদর পূর্ধি" করিয়া খাওয়ার কথা ত করচায় নাই। তবে তিনি আহার করিয়াছিলেন ইহা লিখিত আছে, কিন্তু অভিযোগকারী বলেন “সন্ন্যাস গ্রহণের পরে তিনি ( মহাপ্রভু ) অন্নভোজন একরূপ পরিত্যাগ করেন, কেবল নাসিকা দ্বারা যংকিঞ্চিং আহার করিয়া জীবন ধারণ করিতেন ।” এরূপ অদ্ভূত কথা ত এইখানে এই প্রথম শুনা গেল। এই সকল গোড়া বৈষ্ণবদলের নানারূপ আজগুবী সংস্কার সম্বন্ধে বাক্য ব্যয় করা অনাবশ্বক। করচা হইতে উক্ত স্থানটি উদ্ধত হইল । *প্রভু বলে এই চাউল বড় চিকণিয়া । ইহারে ডাকয়ে লোকে কি নাম ধরিয়৷ ৷ মিত্র বলে জগন্নাথ ভোগ ইহার নাম। ভোগ লাগাইলে হয় পূর্ণ মনস্কাম ॥ জগন্নাথ ভোগ শুনি প্ৰভু চমকিলা । অমনি প্রেমের ধারা বহিতে লাগিল ॥” ( ১৪ পৃ: ) এই বর্ণনার সহিত চৈতন্ত চরিতামৃতে বর্ণিত মহাপ্রভুর পুরীতে প্রসাদ ভক্ষণের কথার ঐক্য আছে, যথা :–“তার অল্প লঞা জাহাতে যদি দিল * * কোটি অমৃতের স্বাদ পাইয়। প্রভুর চমৎকার। সৰ্ব্বাঙ্গে পুলক নেত্রে বহু অশ্রুধার ॥ (চৈ, চ, অন্ত ) ৩। আপত্তি কারক লিখিয়াছেন—গোবিন্দদাস মহাপ্রভুর উচ্ছিষ্ট খাইতেন, তৎকৃত এই উক্তিও বিশ্বাসযোগ্য নহে। কারণ তাহার উচ্ছিষ্ট খাওয়ার জন্ত শত শত ব্রাহ্মণ উপস্থিত ছিলেন । এই তর্কের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নাই।