পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૨ গোবিন্দ দাসের করচা এই সময়কার ত্রিবাঙ্কুরের ইতিহাস সম্বন্ধে ঐতিহাসিকগণ অতি অল্প কথাই জ্ঞাপন করিয়াছেন। এই সন্দেহপূর্ণ জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে হইলে ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের রাজাদের ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অধিনায়কদের তাৎকালিক ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে জানা দরকার, তজ্জন্ত বিস্তর মাল মসলা ঘাটিতে হইবে । এই অসাধ্য সাধনের দুর্গম পথ ত্যাগ করিয়া আপত্তিকারক এক কথায় সহজ মীমাংশ। করিয়াছেন । “এক মাত্র এই কারণেই করচ, অগ্রহ ।” তাহার যুক্তিটা শাণিত করিয়৷ চৈতন্য চরিতামৃতের দিকে ফিরাইয়া লউন । উক্তগ্রন্থের মধ্য-খণ্ডের অষ্টম পরিচ্ছেদে এক শত ত্রিশ শ্লোকে “প্রতাপরুদ্রের” স্থলে গ্রন্থকার “বৰ্দ্ধনরুদ্র” লিথিয়াছেন। এখন যদি এক মাত্র এই কারণেই চৈতন্য চরিতামৃতকে অগ্রহ করা হয়, তবে লেখক কি বলিবেন ? চৈতন্য প্রভুর পাচক ব্রাহ্মণের দরকার এবং বর্ণাশ্রম। আপত্তি-কারকেরা বলিতেছেন ( প্রবাসী ৪র্থ সংখ্যা, ২৫ ভাগ, ১ম খণ্ড, ৪৮• পৃ: ) যে কৃষ্ণদাস ব্রাহ্মণ যদি মহাপ্রভূর সঙ্গে না যাইবে, তবে তাহাকে রাধিয়া খাওয়াইবে কে ? সন্ন্যাস গ্রহণের পরে কখনও তো এমন শুনি নাই যে কেহ রাধুনী বামুন সঙ্গে লইয়া গিয়াছেন। রূপ, সনাতন, জীব ইহঁারাও তো ব্রাহ্মণ কুলে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন ইহঁাদের তে রাধুনী বামুন সঙ্গে লওয়ার বৃত্তান্ত পাওয়া যায় না। বুদ্ধদেব হইতে শ্ৰীনিবাস, নরোত্তম এমন কি লালা বাবু পৰ্য্যন্ত কাহাকেও তো পাচক ব্রাহ্মণ সঙ্গে লওয়ার জন্য ব্যস্ততা দেখা যায় না | পূৰ্ব্বেই উক্ত হইয়াছে, কবিকর্ণপুর স্পষ্টাক্ষরে বলিয়াছেন, গোদাবরীর তীর পর্য্যন্ত যে সকল ব্রাহ্মণ র্তাহার অনুগমন করিয়াছিলেন চৈতন্ত র্তাহাদিগকে সঙ্গে যাইতে দেন নাই। প্রতাপরুদ্র যখন সাৰ্ব্বভৌমকে অমুযোগ দিয়া বলিলেন, ব্রাহ্মণ সহচর ছাড়া তাহাকে আপনার যাইতে দিলেন কেন ? তখন সাৰ্ব্বভৌম বলিলেন, মহাপ্রভূর নিষেধে কোন ব্রাহ্মণ র্তাহার অনুগমন করিতে পারেন নাই (রাজা—“ব্রাহ্মণাস্তাবদ রং—সেতুবন্ধ পৰ্য্যস্তং কিমু ন প্রেষিতাঃ ভট্টাচাৰ্য্য—“তষ্ঠানমুমতেঃ গোদাবরী পৰ্য্যন্তস্তু।” চৈতন্য চন্দ্রোদয় নাটক, ৭ম অঙ্ক: । ) মোট কথা আধুনিক বৈষ্ণবদের কেহ কেহ বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করিবার আগ্রাহাতিশয়ে এই জীবস্ত নরদেবতাটিকে শ্লোকাঙ্কিত পাষাণ-বিগ্রহে পরিণত করিতে চান । তাহারা তাহাকে স্মৃতিকারদিগের অধীন এবং তাহাদিগের অপেক্ষা ছোট করিয়া ফেলিতেছেন। চৈতন্য-জীবনী পাঠ করিলে দেখা যায় তিনি সন্ন্যাস আশ্রমের নিয়মগুলি মানিয়া চলিতেন না । তিনি সন্ন্যাসের নিয়ম লঙ্ঘন করিয়া প্রত্যন্ত প্রেম-ভক্তি পরিপুষ্ট করিবার জন্ত বারংবার জগন্নাথের ভোগ আস্বাদ করিতেছেন, এইজন্ত সাৰ্ব্বভৌম