পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छूभिक - \VاوSD প্রথমতঃ তাহার প্রতি বিরক্ত হইয়াছিলেন। “জগন্নাথ যতবার করয়ে ভোজন। ততবার সন্ন্যাসী সে করয়ে ভক্ষণ ॥ যুবাকালে এত ভক্ষণ যে জন করয়। তার কাম নিবৃত্তি কেমন মতে হয় ॥” ( লোচন দাসের চৈতন্ত্যমঙ্গল মধ্যখণ্ড ) এই সন্ন্যাসের রীতি অগ্রাহ করার জন্ত সাৰ্ব্বভৌম চৈতন্যদেবকে অমুযোগ দিলে তিনি পরম দৈন্ত সহকারে বলিয়াছিলেন—“সন্ন্যাসী আমারে নাহি জানিও নিশ্চয়।” “সন্ন্যাসী করিয়া জ্ঞান ছাড় মোর প্রতি।” (চৈ, ভা, অস্ত্য ) দামোদর পণ্ডিত তাহার সন্ন্যাস ধৰ্ম্মের ব্যতিক্রম দেখিলে—তাহাকে শাসন করিতেন ( “আমি তো সন্ন্যাসী দামোদর ব্ৰহ্মচারী। সদা রহে আমার উপর শিক্ষাদও ধরি” ( মধ্য, ৭ম পঃ, ১৯ শ্লোক, চৈ, চ ) একথা সত্য, তিনি মাধৰী-সম্প্রদায় ভুক্ত ছিলেন, কিন্তু তিনি মাধবাচার্য্যের মত মানিয়া চলিতেন না। মাধ্যচাৰ্য্য ভগবানের ঐশ্বৰ্য্যের উপর জোর দিতেন। কিন্তু কে না জানে মহাপ্ৰভু ভগবানের মধুর লীলার অনুরাগী ছিলেন ? অবশ্য এ কথাটা ঠিক যে তিনি ধৰ্ম্মপ্রচারের জন্ত প্রাচীন ঋষিদিগের মতানুসারে নজিরসহ বৈষ্ণব মহাগ্রন্থ 'হরিভক্তি বিলাস’ রচনা করিবার জন্য অশেষ শাস্ত্রকুসলী সনাতনকে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে ছিলেন, সমস্ত স্মৃতিশাস্ত্রের উদ্ধে, তিনি মনুষ্যত্বের অতি উদ্ধেস্থিত দেবলোক হইতে প্রেমের অপূৰ্ব্ব উন্মাদনাময় সঙ্গীত গাহিয়াছিলেন, তাহাতে অচল চলিয়াছিল এবং নদী উজানে বহিয়াছিল। রামরায় শূদ্র হইলেও চৈতন্তদেব তাহাকে আলিঙ্গন করিয়াছিলেন। চৈতন্ত চরিতামৃতের মতে ব্রাহ্মণগণের ইহা ভাল লাগে নাই । তাহারা বলিয়াছিলেন, “এই তো সন্ন্যাসীর তেজ দেখি ব্ৰহ্ম সম । শূদ্র আলিঙ্গিয়া কেন করেন ক্রনন।” (চৈ, চ, মধ্য, ৮ম পঃ, ১৬ ) বস্তুত যে বর্ণাশ্রম-ধৰ্ম্ম চৈতন্যদেব শিথিল করিয়াছিলেন, বৈষ্ণব সমাজে আবার তাহ মাথা জাগাইয়া তুলিতেছিল। কৃষ্ণদাস কবিরাজ এই অংশটি কবিকর্ণপুরের গ্রন্থ হইতে গ্রহণ করিয়াছিলেন, কিন্তু শেষোক্ত পুস্তকে ব্রাহ্মণগণের এই বিস্ময়ের কথাটি নাই । যাহারা করচার বিরোধী, তাহাদের কেহ কেহ কৃষ্ণদাস ব্রাহ্মণ সঙ্গে না থাকিলে মহাপ্রস্তু বিদেশে মহা মুস্কিলে পড়িতেন, এই আভাস দিয়াছেন। তিনি শুধু রামরায়কে আলিঙ্গন দেন নাই, শূদ্র শ্ৰীগোবিন্দকেও আলিঙ্গন দিয়াছিলেন। নিত্যানন্দকে তিনি জাতি-ভেদের গওঁী লতঘন করিয়া ভ্রাতৃভাব স্থাপনের জন্য বঙ্গদেশে নিযুক্ত করিয়া রাখিয়াছিলেন, নিত্যানন্দ ছিলেন ভোলা মহেশ্বর—পতিতের প্রতি তাহার ছিল অপার করুণা। চৈতন্ত বুঝিয়াছিলেন, তিনিই পতিত-উস্কার-কার্য্যের সর্বাপেক্ষ যোগ্য। এইজন্য তিনি নিত্যানন্দকে বঙ্গদেশ ছাড়িয়া দীর্ঘকাল কোথায়ও থাকিতে দিতেন না। কিরূপে নিয়শ্রেণীর লোকেরা আভিজাত্য গৰ্ব্বিত সমাজে একটু আদর পাইবে, তাহা তিনি গৃহের অর্গল বন্ধ করিয়া নির্জনে নিত্যানন্দের সঙ্গে আলোচনা করিতেন। (চৈ, ভা, )