পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোবিন্দ দাসের করচা ·GL হরিধ্বনি শুনি ব্যাঘ্র লেজ গুটাইয়া । পিছাইয়া গেল এক বনে লম্ফ দিয়া ॥ আশ্চৰ্য্য প্রভাব মুহি স্বচক্ষে হেরিয়া । সেই পদরজ মাথে লইনু তুলিয়৷ ৷ ভদোনদীতীর হৈতে পঞ্চক্রোশ দূরে। কালতীৰ্থ নামে তীর্থ যেখানে বিহরে ॥ বরাহ দেবের মূৰ্ত্তি আশ্চৰ্য্য গঠন। যাহা হেরি মুগ্ধ হয় মুনি ঋষিগণ ॥ দর্শন করিয়া প্রভু প্রণাম করিলা । এক পাণ্ড প্রভুকণ্ঠে মালা আনি দিলা ॥ নিৰ্ম্মাল্য পাইয়া প্রভু পুলকিত মন । কঁাপিতে লাগিল অঙ্গ ঝরিল নয়ন ॥ পিচকিরি সম অশ্রু বহিতে লাগিলা । ফুলে ফুলে কান্দি প্রভু আকুল হইলা । পঞ্চ ক্রোশ দক্ষিণেতে সন্ধিতীথ আছে । যাত্রা করিলেন প্রভু মুহি পাছে পাছে । নন্দ ভাদ্রা দুই নদী মিলেছে সেখানে । স্বান করিলেন গিযা দেই সন্ধি স্থানে । সেই তীর্থস্বামী সদানন্দপুরী হয়। বড়ই পণ্ডিত তেঁহ হৈল পরিচয় ॥ তুলিলা অদ্বৈতবাদ সদানন্দ পুৰী । এক তর্কে পুরীর ভাঙ্গিল ভারিভুরি। অবশেষে সনানন্দ আশ্চর্য্য হইয়া । ভক্তি ভরে প্রভুপদে পড়ে লোটাইয়া ॥ তাৱে ভক্তিতত্ত্ব দিয়া সন্ন্যাসী আমার । চাইপল্লীতীর্থে যান দেখিতে আচার । বড় সদাচার হয় সেই তীর্থবাসী। তথি গিয়া উপনীত শচীর সন্ন্যাসী ৷ সিদ্ধেশ্বরী নামে এক ভৈরবী সুন্দরী। তেজস্বিনী মহাতপা যেন মহেশ্বরী ॥ Gł অস্থিচৰ্ম্ম অবশিষ্ট হইয়াছে তপে । বসিয়া আছেন এক বিম্বমূলে জপে ॥ স্থিরভাবে বসি তিনি করিছেন ধ্যান । তাহারে দেখিলে পাপী পায় বহু জ্ঞান। শতবর্ষ বয়ঃক্রম হয়েছে তাহার। তথাপি না চিন যায় হেরিলে আকার ॥ শৃগালী ভৈরবী নামে আর এক মুরতি । নদীর কুলেতে হয় তাহার বসতি ॥ ভক্তি সহকারে করি শৃগালী দর্শন। কাবেরীর কূলে গেলা শচীর নন্দন ॥ স্নান করি কাবেরীতে গৌরাঙ্গ-কিশোর। হরিনাম মৃধাপানে হইল। বিভোর ॥ অপরাহ্লে মোরে বলে ভিক্ষা করিবারে । ভিক্ষা লাগি যাইলাম নগর মাঝারে ॥ থোড়া থোড়া চুণা আটা সংগ্ৰহ করিয়া । প্রভুর সম্মুখে আনি দিলাম ধরিয়া ॥ রুটি পাকাইয়া প্রভূ লাগাইয়। ভোগ। প্রসাদ পাইয়া মোর হৈল উপযোগ ॥ আমার দয়াল প্রভু নাগর নগরে । প্রাতে উঠি চলিলেন রুষঃ প্রেমভরে ॥ ধূলা মাখা জটাবাধা অন্ত কথা নাই । পথে কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলি চলিছে নিমাই ॥ নাগর নগরে আছে ক্রীরাম লক্ষ্মণ । সেই খানে গিয়া প্ৰভু করিলা বন্দন ॥ নাগরেতে বহুতর লোক করে বাস । সেই থানে হরিনাম করিলা প্রকাশ ॥ প্রভুর প্রেমের গতি হেরি পুরবাসী । আবাল বনিতা সবে হইল। উদাসী । তিন দিন নৃত্যগীত সেই খানে করে। এই কথা প্রচারিল নগরে নগরে ॥ দশ ক্রোশ হতে লোক আসিয়া জুটিল । একে একে সবে প্রভু হরিনাম দিল ।