পাতা:বিশ্বকোষ পঞ্চম খণ্ড.djvu/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• . গজকচ্ছপীয় যুদ্ধ [ l গজকচ্ছপ, [ গজকচ্ছপীয় যুদ্ধ দেখ। ] গজকচ্ছপীয় যুদ্ধ (কী ) গজকচ্ছপীয়ং গজকচ্ছপসম্বন্ধি যুদ্ধং কৰ্ম্মধা । মহাভারতবর্ণিত গজ ও কচ্ছপের যুদ্ধ। উপাখানট এইরূপ —বিভাবমু নামে এক মহর্ষি ছিলেন, ইহায় কনিষ্ঠ ভ্রাতায় নাম সুপ্রতীক। সুপ্রতীক বিভাবসুর সহিত একায়ে থাকিতে ভালবাসিতেন না, এই কারণে তিনি সময় পাইলেই বিভাবস্থর নিকটে পৈতৃক ধন বিভাগ করিবার কথা উঠাইতেন । বিভাবসুর স্বভাবটা কিছু চটা, হঠাৎ চটিয়া উঠিতেন, কাজেই তাহার বিরক্তি বোধ হইল। একদিন বিভাবসু সুপ্রতীককে ডাকিয়া বলিলেন, “দেখ সুপ্রতীক! আমি তোমার ব্যবহারে নিতান্তই অসন্তুষ্ট হইয়াছি, তুমি অন্তাররূপে পিতৃধন ভাগ করিয়া লইতে চাহিয়াছ, অতএব তুমি গজযোনি প্রাপ্ত হইবে।” নির্দোষ সুপ্রতীক শুনিয়া অবাকৃ হইলেন, ভাবিয়া চিন্তিয়া শেষে বলিলেন, “আমার দোষ নাই, তথাপি দারুণ শাপ দিয়াছ, অতএব তুমিও কাছিম হইয়া জন্মগ্রহণ কর।” সেকালের ব্রাহ্মণ, কথা কখনও মিথ্যা হইবায় নয়, কাজেই এক ভাই হাতী আর একজন কাছিম হইয়া জন্মগ্রহণ করিলেন। বিভাবসুকে কচ্ছপ হইয় গভীর জলে যাইতে হইল। সুপ্রতীক হাতী হইয়াও কিছুদিন সেই বাড়ীতেই বাস করিতে পারিলেন, এবং সেই অবসরে পৈতৃক ধনের অনেক অংশ সংগ্ৰহ করিয়া শু ড়ের মধ্যে রাখিয়া দিলেন । ইহাদের জন্মান্তর হইল ; কিন্তু বিদ্বেষভাষ কিছুই কমিল না। উভয় উভয়কে জব্দ করিবার চেষ্টায় থাকিলেন । বলিয়া রাখা উচিত ষে, গজের কলেবর ৬ যোজন উন্নত ও ১২ যোজন আয়ত, এবং কাছিমটী ৩ যোজন উন্নত, পরিধি ১০ যোজন । কাছিমট একটা বৃহৎ সরোবরে বাস করিত, দৈবক্রমে একদিন ছোট ভাই সরোবরে জল খাইতে আসিয়া উপস্থিত হইল । বড় ভাই কাছিম সময় পাইয় তাহাকে কামড়াইয়া ধরিল। হাতীও বলবান ; কাছিমও বড় কম নহে। উভয়ের ঘোরতয় যুদ্ধ হইতে লাগিল, সকলেই দেখিয়া শুনিয়া বিস্মিত হইল। কিন্তু যুদ্ধটা নিবারণ করিতে কাহারও সাধ্য হইল না। একদিন পক্ষিয়াজ গরুড় ক্ষুধায় বড়ই কাতর হইয়। পিতার নিকটে খাবার চাহিলে পিতা কগুপ যুধ্যমান গজকচ্ছপ দুইটাকে খাইতে অনুমতি করেন। গরুড় পিতার আদেশে উতয়কে পায়েয় নখে করিয়া লইয়া উড়িয়া চলিল । গরুড় মনে মনে ভাবিতে লাগিল, কোথায় বসিয়া গজকচ্ছপকে উদরসাং করি, শেষে একটা বটগাছে বসিয়া খাইতে লাগিল ; তাহাতে গরুড়কে আরও বিপদগ্ৰস্ত হইতে ছইল। বটগাছ ভাঙ্গিল, পক্ষিয়াজ গজকেশরী দেখিল গাছটা ভাঙ্গিয়া পড়িলে তপস্তানিরত বালখিল্য মুনিগণের প্রাণ উড়িয়া যাইবে। কাজেই তাহাকে চঞ্চুপুটে সেই তয় বটশাখা লইয়া উড়িতে হইল। অনেক দূরে যাইয়া জনমানবশূন্ত তুষারময় পৰ্ব্বতে বসিয়া গজকচ্ছপকে উদরসাৎ কয়িল। গজকচ্ছপের যুদ্ধ যেরূপ ভয়ঙ্কর, বোধ হয় আর সেরূপ ভয়ানক যুদ্ধ হয় নাই । এই জন্যই এ দেশীয় লোকের ভীষণ যুদ্ধ দেখিয়া “বাপ ! কি ভয়ানক, যেন গজকচ্ছপের যুদ্ধ” বলিয় উপমা দিয়া থাকে। (ভারত ১২৯-৩০ অঃ ) গজকচ্ছপের যুদ্ধের কথা সত্যই হউক জায় মিথ্যাই হউক, কিন্তু অতি পুৰ্ব্বকালে কচ্ছপও এখনকার হাতীর মত এক একটা বড় ছিল, ভূতত্ত্ববিদ্যার সাহায্যে তাছার প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে । বড় বেশী দিনের কথা নয়, হিমালয়-সন্নিহিত শিবালিক পাহাড় হইতে প্রস্তরীভূত এক প্রকার কচ্ছপের কঙ্কাল বাহির হইয়াছে। সেইখানি এখনকার বড় বড় হাতীর কঙ্কাল অপেক্ষ কোন অংশে ছোট নহে। (Proc. Geological Survey of India.) গজকট ( দেশজ ) একপ্রকার লতানিয়া গাছ । (Wibera Scandens.) গজকণা (স্ত্রী ) গজপিপ্পলী, গজপিপুল । গজকন্দ ( পুং ) গজে গজদন্তইব কনোহন্ত বহুত্ৰী । হস্তিকন্দ বৃক্ষ । ( রাজনি- ) হাতির্কাদ । গজকর্ণ (পুং ) গজস্ত কর্ণইব কর্ণ্যেস্ত বহুত্রী। যক্ষবিশেষ । ( ভারত ২১০ অঃ । ) গজ কর্ণা (স্ত্রী) মূলবিশেষ। ইহার গুণ-তিক্ত, উষ্ণ, বাত ও কফনাশক, স্বাছ এবং শীতজরবিনাশক । ইহায় কনের গুণ— পাণ্ডুরোগ, ক্রিমি, প্লীহা ও গুল্মরোগনাশক ; গ্ৰহণী, অর্শ ও বিকারত্ন । অপর গুণ-বনশূরণ কন্দের সমান। (ভাবপ্রকাশ) বাচস্পত্যে ‘গজকর্ণা’ স্থলে গজকণী পাঠ দেখিতে পাওয়া যায়। গজকাঠি ( দেশজ ) দুইহাত পরিমিত মাপেয় কাঠি । গজকুহুম (পুং) নাগকেশর। (চক্রদত্ত) গজকুসুম (স্ত্রী) নাগকেশর। গজকুৰ্ম্মাশি (পুং) গজকুর্ষে অশ্নাতি অশ-ণিনি। গরুড় । (শব্দরত্না- ) পক্ষিরাজ গরুড় যুধ্যমান গজকচ্ছপকে ভক্ষণ করে, তাই তাহার এই নাম হইয়াছে। [ গজকচ্ছপ দেখ। ] গজকৃষ্ণা (স্ত্রী ) গজইৰ কৃষ্ণা। গজপিপ্পলী। (ভাবপ্রকাশ।) গজপিপুল । গজকেশরী, কেশরীবংশীয় উড়িষ্যার একজন পরাক্রান্ত রাজা, বটকেশরীর পুত্র। ইনি ১২ বর্ধমাত্র রাজত্ব করেন। [ উৎকল দেখ । ] у 8&