পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লামা [ ২৩১ - ] লামা নাগাৰ্জন ততর, এগুপ্ত ও জনগৰ প্রকৃতির স্থায় তিনি | উৎসাহে তিব্বতে লামাধৰ্ম্ম স্বপ্রতিষ্ঠিত হইয়া উত্তরোত্তর বিস্তৃত স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন বলিয়া তাঁহাদের ধারণা । হইয়া পড়িল। বোন-পা ধৰ্ম্মাশ্রিত :তিব্বতৰাসী আচরিত তিব্বতৰাসিগণ এই নবপ্রবর্তিত লামামতকে ধৰ্ম্ম ৰ বৌদ্ধধৰ্ম্ম বলিয়া থাকে ; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহাতে প্রকৃত বৌদ্ধধৰ্ম্মের ছায়ামাত্র বিস্তমান আছে । তান্ত্রিক বীরাচারে উহা সম্যক রূপে বিপ্লাবিত। নানাদেবতার উপাসনা এবং ভৌতিক ক্রিয়া ও ভোজবিদ্যা সেই প্রাচীন সূক্ষ্মতম ধৰ্ম্মতন্ত্রকে আশ্রয় করিয়া তাহাকে নবভাবে গঠিত করিয়াছে । এই ধৰ্ম্মবিশ্বাসিগণ “নঙ, প” এবং যাহার এই মতবহির্ভূত তাহার “পিাড়িঙ” নামে কথিত । উপাধ্যায় শাস্তরক্ষিতের পর “পল বঙস" আচার্য্যের আসন গ্রহণ করেন; প্রকৃত প্রস্তাবে “ব্য খুগ, জিগ স” সৰ্ব্বপ্রথম দীক্ষিত লামা হইয়াছিলেন । শিক্ষানবিশ শিষ্যগণের মধ্যে লামা সগোর বৈরোচনই সৰ্ব্বাপেক্ষা সুপণ্ডিত হইয়াছিলেন। তিনি লামাসমাজে বুদ্ধের ভ্রাতা ও সহচর আননের অংশাবতাররূপে সন্মানিত। বৈরোচন তিববতীয় ভাষায় অনেক সংস্কৃত গ্রন্থের অমুবাদ করিয়াছিলেন । গুরু পদ্মসম্ভব লামাধৰ্ম্ম প্রতিষ্ঠা ও প্রচারপ্রসঙ্গে যে সকল আচারানুষ্ঠান বিধিবদ্ধ করিয়াছিলেন, তাহ জানিবার উপায় নাই। তৎসম্প্রদায়ভুক্ত পচিশ জন শিষ্য র্তাহার তিরোধানের কএক শতাব্দ পরে তৎপ্রবর্তিত প্রকৃত ধৰ্ম্মমত ও পদ্ধতি বলিয়া যে সকল গ্রন্থ সঙ্কলন করিয়া গিয়াছেন, তাহ সম্ভবতঃ তৎকালীন আচারবিমিশ্রিত বলিয়াই বোধ হয়। তবে আদি পদ্ধতি অনুস্থত এবং ভৌতিকবিদ্যাসমাশ্রিত ক্রিঙ-ম-প সম্প্রদায়ের আচার পদ্ধতি লক্ষা করিলে সহজে উপলব্ধি হয় যে, পদ্মসম্ভব তাহার জন্মভূমি উদ্যান এবং কাশ্মীরে প্রচলিত ঘোর তান্ত্রিক ও ভোজবিদ্যাপ্রস্থত মহাযান-সম্প্রদায়ের বৌদ্ধমতই স্থাপন করিয়াছিলেন। তাহাতে মন্ত্রমূলক শৈবধৰ্ম্ম ও ভূতোপাসক বোন-পা ধৰ্ম্ম মিশ্রিত ছিল । গুরু পদ্মসম্ভবের যে পঞ্চলিংশতি শিষ্য ছিলেন, তাহার সকলেই ভৌতিক ও ভোজবিস্তায় পারদর্শী। তাহারা মন্ত্রবলে ভূতগণকে বশীভূত করিয়া তিব্বত ভূমে তৎপ্রবর্তিত ধৰ্ম্মস্থাপনে বন্ধপরিকর হন । তিব্বতবাসী বৌদ্ধগণ পদ্মসম্ভবের অসামান্ত তিরোধান ও তাহার ভোজবিদ্যাপ্রভাব লক্ষ্য করিয়া তাহাকে দ্বিতীয় বুদ্ধরূপে পূজা করিয়া আসিতেছেন। এখনও প্রাচীন লামাসম্প্রদায়দিগের মঠে তাহার আট প্রকার মূৰ্ত্তির উপাসনা হইয়া থাকে । তিববতবাসীর বিশ্বাস, গুরু পদ্মসম্ভব সময়ে সময়ে ঐ বিভিন্ন মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছিলেন। রাজা থি-ক্রোঙ-দেৎস ও তাহার কুই জন বংশধরের প্রগাঢ় প্রথার সামঞ্জস্তসাধক এই নবীন মতের প্রতিদ্বন্দী না হইয়া বরং রাজার ভয়ে তাহার পোষকতাই করিয়াছিল। তাহারা বুঝিয়াছিল যে, এই মতে দ্বিধ ভাবিবার কোল কারণ নাই, অধিকন্তু ইহাতে নূতন শক্তি সঞ্চারিত হইয়াছে। তাই শক্তাত্মক নবধৰ্ম্মে তিব্বতবাসী অনুরক্ত হওয়ায় লামাধৰ্ম্ম শীঘ্রই পুষ্টি ও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইল। কিন্তু শিক্ষাবলে তিববতবাসী যতই মানসিক উন্নতি সাধন করিতে লাগিল, ততই তাহারা লামাধৰ্ম্ম-সংস্কারের আবশুকতা অনুভব করিল। জ্ঞানবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ধৰ্ম্মপদ্ধতিরও সংস্কার হইয়াছিল ; এই কারণে তিব্বতীয় বৌদ্ধধৰ্ম্মের তিনটা যুগ নিরূপণ করা যায়। ১ম আদি যুগ অর্থাৎ রাজা থি-স্রোঙ দেৎসনের রাজ্যকালে লামাধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠা হইতে বৌদ্ধদিগের তাড়না পৰ্য্যন্ত। ২য় মধ্যযুগ বা লামাধৰ্ম্মের সংস্কার কাল পর্য্যন্ত এবং ৩য় বৰ্ত্তমান লাম ধৰ্ম্ম বা খৃষ্টীয় ১৭শ শতান্ধে ধৰ্ম্মাচাৰ্য্য দলইলামার প্রাধান্ত ও রাজত্ববিস্তার কাল । ৮২২ খৃষ্টাব্দে উৎকীর্ণ লাসানগরীর লাটস্তম্ভের অমুশাসনপাঠে জানা যায় যে, তিব্বত ও চীনবাসিগণ তিনট পরম পুরুষ এবং পবিত্ৰচেতা সাধুগণ স্বৰ্য্য, চন্দ্র, গ্রহ ও তারাগণের উপাসন করিতেন। উহাই প্রকৃতপক্ষে তথাকার আদি-লামাযুগের নিদর্শন বলিয়া গণ্য করা যায়। ৭৮৬ খৃষ্টাব্দে থি স্রোঙ দেৎসনের মৃত্যুর পর তৎপুত্র মুথিৎসান পো রাজা হন। ইনি রাজ্যাধিকারের পর বিষপ্রয়োগে নিহত হইলে তদীয় ভ্রাতা সদন লেগ সিংহাসনে আরোহণ করেন। ইনি বৌদ্ধধৰ্ম্মবিস্তারার্থ কমলশিলাকে তিব্বতে আনয়ন করিয়াছিলেন। তৎপুত্র রালপছন ৮১৬ খৃষ্টাব্দে (মতান্তরে খৃষ্টীয় ৯ম শতাদের শেগভাগে ) সিংহাসনে আরূঢ় হন। তাহার রাজাকালে নাগাৰ্জুন, বসুবন্ধু ও আর্য্যদেবের প্রসিদ্ধ টীকা ও ধৰ্ম্মগ্রন্থসমূহ ভোটভাষায় অনুদিত হয়। এতদ্ভিন্ন তিনি ভারতবাসী কএকজন বৌদ্ধযতিকে ধৰ্ম্মগ্রন্থসমূহের অনুবাদকাৰ্য্যে লিপ্ত করিয়াছিলেন ; তন্মধ্যে স্থবিরমতির শিষ্য জিনমিত্র, শীলেঙ্গবোধি, সুরেঞ্জবোধি, প্রজ্ঞাবর্মন, দানশীল এবং বোধিমিত্রের নাম উল্লেখযোগ্য । রাজা রালপচ্ছনের বৌদ্ধধৰ্ম্মামুরাগে ঈর্ষাপরতন্ত্র হইয় তদীয় কনিষ্ঠ ভ্রাতা লঙ দৰ্ম্ম বৌদ্ধধৰ্ম্মদ্বেষী হইয়া পড়েন এবং ৮৯৯ খৃষ্টান্ধে স্বীর ভ্রাতাকে নিহত করিয়া স্বয়ং সিংহাসন হস্তগত করেন। তিনি রাজপদারূঢ় হইয়া লামাদিগের উপর যথেচ্ছ অত্যাচার করিতে থাকেন ; এমন কি, তিনি মন্দির ও মঠ ধ্বংস করিয়া লামাসন্ন্যাসীদিগকে জীবহিংসাকারী কসাইর কার্য্য