পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিঙ্গায়ং [ २१२ ] লিঙ্গায়ৎ কুষ্ঠ, মাষ, মরীচ, তগর, মধুপিপ্পলী, অপামার্গ, অশ্বগন্ধ, বৃহতী, সিতসর্ষপ, যব, তিল ও সৈন্ধব এই সকল দ্রব্য একত্র চুর্ণ করিয়া লিঙ্গ ও স্তনাদিতে মর্দন করিলে উহার বৃদ্ধি হয় । লিঙ্গবৰ্দ্ধন (ত্রি) শিশ্নের বৃদ্ধিকরণ। লিঙ্গবৰ্দ্ধিন (ত্রি) - লিঙ্গকৃদ্ধি। স্থিয়াং জীপ, । লতাভেদ (Achyranthes Aspera) ! লিঙ্গবন্ধনী (স্ত্রী) লিঙ্গং বন্ধয়তীতি বৃধ শিচ, ইনি, উীপ, অপামার্গ। (শব্দচ” ) লিঙ্গবিপৰ্য্যয় (পুং ) ব্যাকরণোক্ত পুংস্ত্র্যাদি লিঙ্গের পরিবর্তন। চিহ্নের বৈপরীত্য । লিঙ্গৰ্বত্তি (পুং লিঙ্গমেব বৃত্তিঞ্জীবনোপায়ে যন্ত । জীবিকার্থ জটাদি চিহ্নধারণ ৷ পৰ্য্যায়—ধৰ্ম্মধবজী । “জীবিকাদিনিমিত্তন্তু যে বিভৰ্ত্তি জটাদিকম্। ধৰ্ম্মধ্বজ লিঙ্গকৃত্তিদ্বয়ং তত্ৰ নিগষ্ঠতে ॥” (শব্দরত্নাe) লিঙ্গবেদী (স্ত্রী) দেবমূৰ্ত্তি স্থাপনের চত্বর। লিঙ্গশরীর ( ক্লী) লিঙ্গদহ। স্বক্ষশরীর, মৃত্যুদ্বারা যাহার ধ্বংস হয় না । [ প্রকৃতি শৰ দেথ । ] লিঙ্গশাস্ত্র (কী) ব্যাকরণোক্ত শব্দসমূহের লিঙ্গাণিনির্ণায়ক নিয়ম বলী । ২ ব্যাকরণ গ্রন্থভেদ । লিঙ্গসদ্ভূত (স্ত্রী) লতাবিশেষ, লিঙ্গিনী। লিঙ্গস্থ । পুং ) লিঙ্গে ব্রহ্মচর্য্যে তিষ্ঠতি স্থা-ক। ব্রহ্মচারী। “ন সাক্ষী নৃপতিঃ কাৰ্য্যো ন কারুককুশীলবে। ন শ্রোত্রিয়ো ন লিঙ্গস্থো ন সঙ্গেভো বিনির্গত: ॥” (মমু ৮৬৫) লিঙ্গস্থঃ ব্রহ্মচারী (কুল্লক ) লিঙ্গহনী (স্ত্রী) মূৰ্ব্ব । লিঙ্গাগ্র (কী) মেঢ়াগ্রভাগ। লিঙ্গানুশাসন (ক্ল) ২ লিঙ্গব্যবহারপ্রণালী। ২ ব্যাকরণোক্ত শব্যাদির লিঙ্গনিরূপণার্থ যে নিয়ম বিহিত হইয়াছে। লিঙ্গায়ৎ, দক্ষিণ-ভারতের স্বপ্রসিদ্ধ শৈবসম্প্রদায়। লিঙ্গমূৰ্ত্তির উপাসনা তাহদের ধৰ্ম্ম এবং স্বর্ণ বা রৌপ্য কোঁটায় কবচরূপে স্বর্ণ বা প্রস্তরনিৰ্ম্মিত শিবলিঙ্গমুৰ্ত্তি বাহুতে বা গলদেশে ধারণ তাহদের প্রধান কৰ্ম্ম । এতদ্ভিন্ন তাহাদের মধ্যে বিবাহ, অস্ত্যেষ্টি প্রভৃতি বিষয়েও নানারূপ বিভিন্ন আচারপদ্ধতি প্রচলিত আছে । দক্ষিণাত্যের লিঙ্গায়ৎ সম্প্রদায় ভারতের নানাস্থানে জঙ্গম, লিঙ্গধারী, লিঙ্গধর, লিঙ্গবন্ত, লিঙ্গমৎ প্রভৃতি নামে পরিচিত। তাহারা বীরাচারী শৈব । গলদেশে বা বাহুতে লিঙ্গধারণ ও তাহার উপাসনাদি ব্যতীত তাহারা বিশেষ কোন ধৰ্ম্মপদ্ধতির অনুসরণ করেন না । তাহদের মধ্যে জাতিভেদ নাই। ব্রাহ্মণদিগকে র্তাহারা জাতিশ্রেষ্ঠ বলিয়া স্বীকার করেন না। কৃষিকাৰ্য্য ও বাণিজ্যপরিচালনই তাহাদের জীবিকার্জনের একমাত্র অবলম্বন । র্তাহারা সাম্প্রদায়িক পদ্ধতির বাহ ক্রিয়াকাও বিশেষ শ্রদ্ধার সহিত সম্পাদন করিলেও, নীতিসম্পর্কে তাহাদের বিশেষরূপ উচ্ছ,খলতা দৃষ্ট হয়। বেদ ও ব্রাহ্মণে তাহাদের কোনরূপ আস্থা নাই । পূৰ্ব্বে উক্ত হইয়াছে যে, দক্ষিণভারতে শিবলিঙ্গের উপাসন প্রচলিত ছিল । তথাকার বর্তমান লিঙ্গোপাসক সম্প্রদায় লিঙ্গায়ৎ নামে প্রসিদ্ধ। কল্যাণপত্তনের অধিপতি বিজল রাজার সময়ে ঐ অঞ্চলে জৈনধৰ্ম্মের সমধিক প্রাচুর্ভাব ছিল। ১১৬৯ খৃষ্টাব্দের পর, বাসব নামক এক ব্রাহ্মণকুমার জৈন ধৰ্ম্মমত নিরসন করিয়া শিবপূজা প্রচার উদ্দেশে দাক্ষিণাত্যভূমে জঙ্গম-সম্প্রদায় প্রবর্তিত করেন। মহারাষ্ট্রের অন্তর্গত বেলগাম জেলার মধ্যবর্তী ভাগোয়ান গ্রামে এক শৈব ব্রাহ্মণ-বংশে তাহার জন্ম হয় । তিনি স্বীয় মতবিস্তার ও তৎসংক্রান্ত নানাকার্য্য সাধন করিয়া ১১৬৮ খৃষ্টাব্দে পরলোকে গমন করেন। বাসবপুরাণে তাহার চরিত্র সবিশেষ বর্ণিত আছে। জঙ্গমের উক্ত পুরাণ ও সাম্প্রদায়িক অন্যান্ত গ্রন্থামুসারে তাহাকে শিবামুচয় নদীর অবতার বলিয়া বিশ্বাস করেন । উক্ত পুরাণে লিখিত আছে যে, উপনয়নের সময়ে সূর্য্যোপাসনা করিতে হয় বলিয়া বাসব বাল্যকালে যজ্ঞোপবীত গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন এবং বলেন, “আমি শিব ভিন্ন অদ্য গুরুর উপদেশ গ্রহণ করিব না। পরে তিনি স্বীয় মতপ্রতিপোষক একটী অভিনব উপাসক সম্প্রদায় প্রবর্তিত করিতে প্রবৃত্ত হন।’ বাসব হিন্দু ধৰ্ম্মের অন্তর্গত স্বৰ্য্য, অগ্নি ও অন্তান্ত দেবদেবীর পূজা, জাতিভেদ, মরণাস্তর যোনিত্ৰমণ, ব্রাহ্মণের ব্রহ্মসন্তান ও শুদ্ধাত্মা, তাহাদের স্বতন্ত্র প্রভাব ও অভিসম্পাতের আশঙ্কা, প্রায়শ্চিত্ত, তীর্থভ্রমণ, স্থানবিশেষের মাহাত্ম্য, স্ত্রীলোকদিগের . অপ্রাধান্ত ও অপদস্থত, নিকট সম্পৰ্কীয় কন্যার পাণিগ্রহণপ্রতিষেধ, গঙ্গাদি তীৰ্থজল সেবন, ব্রাহ্মণভোজন ও উপবাস, শৌচাশৌচ, সুলক্ষণ, কুলক্ষণ, অস্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আবশ্যকতা প্রভৃতি বিষয় ভ্ৰমাত্মক বলিয়া অগ্রাহ করেন এবং তাহা পরিবর্জন করিতে আদেশ দেন । - তিনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লিঙ্গমূর্তি প্রস্তুত করিয়া স্ত্রী ও পুরুষ শিষ্যগণের হস্তে ও গলদেশে ধারণ করিতে উপদেশ দিয়াছিলেন। তাহার মতে ওঁম, গুরু, লিঙ্গ, ও জঙ্গম এই চারিট পরমেশ্বরকৃত পবিত্র পদার্থ। লিঙ্গায়তগণ ঐ লিঙ্গ ব্যতিরেকে বিভূতি ও রুদ্রাক্ষ নামক শৈবচিহ্ন স্কুইট ধারণ করেন।