পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্দ্ধমান কাল পরেই কোম্পানী সেই উপকার বিস্তৃত হন ; এমন কি জল্পকাল পরেই সঙ্গতগোলায় ইংরাজসৈন্তের সহিত রাজসৈন্তগণের একটা যুদ্ধ হয় এবং সেনপাহাড়ী ও ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর কুঠীর সৈন্তগণের সহিতও হইবার যুদ্ধ হইয়াছিল। এ সময়ের রাঙ্গসরকারে ১৫ সহস্র সৈন্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তৎকালে বর্ধমান একটী করদ রাজ্যরূপে পরিগণিত ছিল । রাজ্যের দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচার মহারাজের নিজ আদালতেই নিম্পত্তি হইত, দম্য ও তস্করদিগকে মহারাজ স্বয়ংই দও প্রদান করিতেন। মহারাজ তিলকচন্দ বাহাদুরের অধীনে ১২ট গড় (দুর্গ ) বর্তমান ছিল, এখনও ঐ সকল দুর্গের ধ্বংসাবশেষ বর্তমান রহিয়াছে। ১৭৬৭ খৃঃ রাজসরকারের বরাদের তালিকায় দৃষ্ট হয় যে, উপরোক্ত ১২টা দুর্গে ২৯৬ জন শুদক্ষ সওয়ার এবং ১১৯১ জন সুশিক্ষিত পদাতিক সতত দুর্গরক্ষার নিযুক্ত ছিল, তদ্ভিন্ন বক্তর দেশীয় পাইক ও পদাতিক ও নিযুক্ত থাকিত । ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর সহিত গোলযোগ মিটিবার পরই শোভাবাজারের রাজা নবকৃষ্ণ বৰ্দ্ধমানের সাজোয়াল হইয়া আসেন । ১৭৬৫ খৃঃ মহারাজ তিলকচন্দ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীকে ৪০৯৪৮৯৩৭U০ টাকা রাজস্ব প্রদান করিয়া যে দাখিলা প্রাপ্ত হয়েন, তাহা অদ্যাবধি রাজবাটীতে রক্ষিত আছে। তিলকচন্দ বহুতর সৎকীৰ্ত্তি এবং বিস্তর দেবত্র ও ব্রহ্মত্র প্রদান করিয়াছিলেন । তাহার রাজত্বকাল পর্যন্ত সৰ্ব্বসমেত ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার বিঘা জমি কেবল ব্ৰহ্মত্র প্রদত্ত হইয়াছিল। ১১৫৭ সালে ইং ১৭৭০ খৃঃ তিলকচন্দ পরলোক গমন করেন । । তাহার দুষ্ট পত্নী, তন্মধ্যে মহারাণী বিষণকুমারীই পুত্রবর্তী হইয়াছিলেন, ইহার গর্ভে মহারাজ তেজচনোর জন্ম । সন ১১৭১ সাল ৬ই মাঘ ( ১৭৬৪ খৃঃ ১৭ই জানুয়ারীতে ) তেজচন্দ জন্ম গ্রহণ করেন এবং তদীয় পিতার পরলোকগমনের পর ৬ বৎসর বয়ঃক্রমকালে পৈতৃক পদ ও সম্পত্তি প্রাপ্ত হন। | কিন্তু তৎকালে নিতান্ত শৈশবাবস্থা হেতু তদীয় জননী অসাধারণ বুদ্ধিমতী মহারাণী বিষণকুমারীই তাহার অভিভাবিক স্বরূপ সমুদয় রাজকাৰ্য্য পর্যবেক্ষণ করিতেন । ১৭৭১ খৃঃ তেজচন্দ বাহাদুর দিল্লীশ্বর শাহজালম্ বাদশাহের আজ্ঞানুসারে তদীয় প্রধান সেনাপতির নিকট হইতে সন ১২৮৪ হিজরা ১২ সওয়াল ১১ জুলুস,তাৰিখে পৈতৃক পদ অর্থাৎ মহারাজাধিরাজ বাহাদুর খেতাব, পঞ্চহাজারি জাত এবং তিন হাজার সওয়ার, নাকার, তোপ প্রভৃতি রাখিবার ক্ষমতাসম্বলিত ফরমাণ প্রাপ্ত হয়েন। তেজচনা সাবালক হইয়া অত্যন্ত বিলাসী হইয়াছিলেন এবং তাহার রাজকাৰ্য্যে অত্যন্ত অমনোযোগ হেতু, অল্পকাল মধ্যেই অনেকগুলি জমিদারী বাকী খাজনায় প্রকাগু নিলামে বিক্রয় হইয়া যায়, সেই XVII 参意象 [ అభిరి | বৰ্দ্ধমান সকল জমিদারী খরিদ করিয়াই এতদেশীয় বহু জমিদারবর্গের সৃষ্টি হইয়াছে। ১৭৯৩ খৃঃ দশশালা বন্দোবস্তের সময়ে মহারাজ তেজচদ বাহাদুর বার্ষিক ৪-১৭১•১ টাকা রাজস্ব এবং ১৯৩৭২২ টাকা পুলবন্দি ধার্য হয়। দশশালা বন্দোবস্তের পরেও মহারাজের কতকগুলি জমিদারি বিক্রয় হইয়া গিয়াছিল, পরস্তু তৎপরেই সহসা তাহার স্বভাবের পরিবর্তন হয় এবং স্বয়ং রাজকাৰ্য্য পর্যবেক্ষণ করিতে থাকেন ও সমুম্বন্ধ জমিদারি পণ লইয়া পত্তনী বন্দোবস্ত করিয়া এককালে বিপুল অর্থ প্রাপ্ত হয়েন। এই বিপুল পশরাশিই বৰ্দ্ধমান-রাজধনাগারের ভিত্তি ; তদবধি একাল পর্যন্ত রাজ্যের যাবতীয় ব্যয়নৰ্ব্বাহান্তে সমস্ত উদ্বৃত্ত অর্থই উক্ত ধনাগারে রক্ষিত হইয়া আদিতেছে। ১৭৯০ খৃ: ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোং মহারাজের হস্ত হইতে দেওয়ানি ও ফৌজদাবী ক্ষমতা, জেলখানা, এবং ১৭৯৩ খৃঃ পুলিস বিভাগ উঠাইয়। লরেন। তৎপূৰ্ব্ব পর্যন্ত ঐ সকল ক্ষমতা তিনি ও তৎপূর্ণ পুরুষগণ অক্ষুণ্ণ ভাবে উপভোগ করিতেছিলেন । মহারাজ তেজচন্দ্র বাহাদুর নয়ট দারপরিগ্রহ করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে মহারাণী নানকী কুমারীই পুত্রবতী হইয়াছিলেন । সল ১১৯৮ সালে তাহার গর্ভে মহারাজ প্রতাপচন্দ্র জন্মগ্রহণ কবেন, শেষাবস্থায় মহারাজ তেজচন্দ্র বাহাদুর পুত্রকেই রাজ্যভীর প্রদান করিয়া স্বয়ং নিশ্চিন্ত হইবেন স্থির করিয়া প্রতাপচন্দ্র বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে তাহাকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেন । মহারাজ প্রতাপচন্দ্র অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও কার্যক্ষম ছিলেন । রাজ্যভার প্রাপ্ত হইয়াই তিনি বিশেষ যত্ন করিয়া , '৮ম আইন প্রণয়ন করাইয়া . স্বীয় রাজ্য রক্ষা করিয়া যান। সন ১২২৮ সালের পৌষ মাসে ২৯ বৎসর বয়ঃক্রম কালে মহারাজ প্রতাপচন্দ্র পরলোক গমন করেন। এই প্রতাপচক্সকে লইয়াই জাল প্রতাপচাদের স্মৃষ্টি । মহারাজ তেজচন্দ্র বাহাদুর পুত্রের পরলোকগমনে পুনরায় রাজ্যভার গ্রহণ করেন এবং খালক পরাণচন্দ্র কপুরের পুত্র চুনিলাল বাবুকে দত্তক পুত্র গ্রহণ করিয়া তাহার মহতাবচন্দ্র নামকরণ করেন । তেজচন্দ্র বাহাদুরের বহুতর কীৰ্ত্তিতে বৰ্দ্ধমান-রাজবংশ সমুজ্জ্বল রহিয়াছে। সন ১২৩৯ সালের ভাদ্রমাসে তেজচন্দ্র পরলোক গমন করেন । ১৮১ • খু: ১৭ নবেম্বর তারিথে মহারাজ মহাতাবচন্দ্র বাহাদুর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮২৭ খৃঃ ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখে তিনি তেজচন্দ্র বাহাদুরের পরলোকগমনের পর তদীয় মহিষ্ট্ৰী মহাবাণী কমলকুমারী ( পরাণচন্দ্র কপুরের ভগিনী) পুত্রের রাজোপাধি প্রাধির জন্ত ভারতবর্ষের তদানীন্তন গবর্ণর জেনারেল লর্ড উইলিয়ম বেণ্টিঙ্ক ব্যহারের সমীপে একখানি পত্র প্রেরণ