পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়—শুক্তা।
৯৭

সরিষা (গোটা বা গুঁড়া) ফোড়ন দিয়া ছাড়। সমস্ত আনাজ এক সঙ্গেই ছাড়িয়া আংসাইতে পার, কেবল বেগুন পরে ছাড়িবে। (ভাজিবার জন্য বৃহদাকার কোমল ‘মুক্তকেশী’ বা ‘লাফা’ বেগুন যাহা সচরাচর ব্যবহৃত হইয়া থাকে শুক্তানি প্রভৃতিতে তৎপরিবর্ত্তে কাঁটাবিশিষ্ট ক্ষুদ্র গৃহস্থী বা কড়ুই বেগুন ব্যবহার করিলেই ভাল হয়)। আংসাও। নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। সিদ্ধ হইলে একটু পিঠালী বাটা মিশাইয়া ঝোল ঝোল বা অপেক্ষাকৃত শুক্‌না শুক্‌না করিয়া নামাও। একটু গাওয়া ঘি মিশাও।

 শুক্তানিতে সাধারণতঃ আনাজি কলা খুব বেশী পরিমাণে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। ইহা লৌহ কড়াইয়ে কষাইলে প্রায়ই কালবর্ণ হইয়া যায় এবং তৎসঙ্গে সমস্ত ব্যঞ্জনের বর্ণও কাল্‌চে করিয়া ফেলে। এই নিমিত্ত আনাজি কলায় একটু হলুদ মাখিয়া ধুইয়া ফেলিয়া অথবা না ধুইয়াই আলাহিদা ভাবে তেলে কষাইয়া লইয়া পরে অপরাপর কষাণ আনাজের সহিত মিশাইলে ব্যঞ্জনের বর্ণ আর কালচে হইবে না। অথবা শুক্তা পিত্তলী কড়াইয়ে বাঁধিবে।

 পেঁপে পূর্ব্বে একটু ভাপ দিয়া লইতে হয়।

 এই সাদা পাঁচমিশালী শুক্তানির সহিত ফুলবড়ী, মটরের বড়ী বা মাষকলাইর বড়ী অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। বড়ী তেলে ভাজিয়া লইয়া ভাঙ্গিয়া (ফুলবড়ী ছাড়া) শুক্তানিতে জল দিয়া ফুটিতে থাকিলে অথবা তাহার কিছু পরে, ছাড়িবে। মটর বড়ী দিলে দুটো শলুপ শাক কুচাইয়া শুক্তার সহিত মিশাইবে।

১১২। সাদাসিদা শুক্ত-ঝোল

 উপরিলিখিত আনাজের মধ্যে শশা, ঝিঙ্গা ও করিলা এই তিনটী একত্রে লইয়া উপরিলিখিত মতে রাঁধিয়া একটু ঝোল ঝোল রাখিয়া নামাইলে যে সাদাসিদে শুকৎ-ঝোল প্রস্তুত হইল বরেন্দ্রে তাহার খুব চলন আছে।