পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তদশ অধ্যায়—ঝোল।
১১৭

ন্যায় ভাঙ্গা তিক্তবিশিষ্ট করা হয় না। কিন্তু শুকতের ন্যায় ভাঙ্গা ঈষৎ ঝোল ঝাল রাখিয়া নামাইতে হয়। উভয়েই পিঠালী দেওয়া যায় না।

 পক্ষান্তরে ছেঁচকীর সহিত ভাঙ্গার পার্থক্য,—ভাঙ্গায় মাছ ও আনাজ অপেক্ষাকৃত কচি হইবে এবং তাহা কদাপি অতিরিক্ত কষাইবে না। ভাঙ্গা একটু ঝোল ঝোল রাখা যাইতে পারে, কিন্তু ছেঁচকিতে তাহা চলিবে না।

 সাধারণ ভাবে মাছ কুটিয়া নুণ হলুদ মাখ। আলু-বেগুন বা আলু পটোল ছোট ছোট ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। তৈলে কষাইয়া রাখ। তৈলে তেজপাতা, লঙ্কা, মেথি ফোড়ন দিয়া কাঁচা মাছ ছাড়। আংসাও। (অধিক আংসাইবে না)। পুনঃ একটুকু নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। রুচী অনুসারে শলুপ শাক বা তাহার কচিডগা কুচি ছাড়। মাছ অপেক্ষাকৃত পচা বা নরম মত হইলে একটু লঙ্কা বাটা দিতে পার নচেৎ প্রয়োজন নাই। ফুটিলে কষান আনাজ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ হাত দিয়া ভাঙ্গিয়া ঘোট ঘোট ডুম ডুমা করিয়া দাও। অল্প ঝোল অবশিষ্ট থাকিতে নামাও। মাছ ছোট হইলে বা নরম মত হইলে ঝোল একেবারে শুকাইয়া ফেলিয়া নামাইবে। পিঠালী দিবে না।

 কালবাউস মাছের এইরূপে ভাঙ্গা রাঁধিবে। কাৎলা ও মৃগেল প্রভৃতি মাছের ভাঙ্গা তাদৃশ সুস্বাদু হয় না।

 মাছে ব্যবহৃত বেগুন সম্বন্ধে এখানে একটি বিষয় বলা নিতান্ত প্রয়োজন। বেগুন বহু প্রকারের পাওয়া যায়। ‘পোড়া’ বা ‘ভাজির’ নিমিত্ত বড় অথচ নরম দেখিয়া বেগুন লইবে যাহাতে তাহা পোড়াইলে বা ভাজিলে সুন্দর মোলায়েম হইবে। ইহাকে ‘মুক্তকেশী’ বা ‘লাফা’ বেগুন কহে। ‘লাফরা’, ‘ঘণ্ট’ প্রভৃতি ব্যঞ্জনের নিমিত্ত এই নরম লাফা বেগুন লইবে কেননা তৎক্ষেত্রে বেগুন গলাইয়া ফেলিয়া ব্যঞ্জন লপেট করাই প্রয়োজন। অপরাপর মাছ তরকরীতে দিবার জন্য ছোট ও অপেক্ষাকৃত শক্ত গোছের বেগুন লইবে,