পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
বরেন্দ্র রন্ধন।

 সূপ হইতে ‘জিরা পর্ব্ব’ আরম্ভ ধরা যাইতে পারে। কেননা সূপে জিরা ফোড়ন পড়িলেও সাধারণতও তাহাতে বাটা ঝাল না দিয়াই রাঁধা হইয়া থাকে। ডাইল গুরুপক্ব করিয়া রাঁধিতে ইচ্ছা হইলে তাহাতে এবং মুড়ীঘণ্ট প্রভৃতিতে বাটা ঝাল (জিরা-মরিচ বাটা, এবং লঙ্কা বাটা, পিপুল বাটাদি) দেওয়া হয়। এবং আরও গুরুপক্ব করিয়া রাখিলে তাহাতে গরমশল্লা সংযোগও করিতে হয়। গুরুপক্ব ডাইলে গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিতে হয়। এবং রুচী অনুসারে মুগ, মশুর, অড়হর, প্রভৃতি ডাইলে পেঁয়াজ ও রশুন ফোড়ন দেওয়া যায়। আদা ফোড়নরূপে ব্যবহৃত হয় না, উহা ছেঁচিয়া মুগ, মাষ প্রভৃতি ডাইলে পশ্চাৎ সংযোগ করা হয়। জিরা ফোড়ন ছাড়া মাষকলাই ডাইলে অতিরিক্ত দুটো মউরী ফোড়ন দিতে হয় এবং মাষ, অড়হর ও মশুরী প্রভৃতির ডাইলে হিঙ ফোড়ন দিলে অনেকের নিকট অধিক মুখরোচক হইয়া থাকে। খেঁসারীর ডাইলে জিরার পরিবর্ত্তে মেথি ফোড়ন দিলে তবে তাহার স্বাদ উত্তম হয়। খেঁসারীর ডাইলের আর এক বিশেষত্ব—ঘৃতের পরিবর্তে তৈলে সম্বারা দেওয়া এবং কঁচা লঙ্কা সংযোগ করা। ডাইল অম্ল বা তিক্ত স্বাদ বিশিষ্ট করিয়া রাখিতে হইলে তাহাতে অতিরিক্ত দুটো সরিষা (গোটা বা গুড়া) ফোড়ন দেওয়া প্রশস্ত।

 সাধারণতঃ কলাই মাত্রই ‘জাঁতায়’ ফেলিয়া ভাঙ্গিয়া ডাইল বাহির করা হয় এবং তৎপর তাহা জলে সিদ্ধ করিয়া সূপ রাঁধা হয়, কিন্তু কতকগুলি ডাইল আছে যাহা রাঁধিবার পূর্ব্বে খোলায় উত্তপ্ত বালুতে বা ঘৃতে ভাজিয়া লইলে তবে তাহার আস্বাদন সমধিক পরিস্ফুট হয়।—মুগ ও মাষ কাঁচা অবস্থায় রন্ধন অপেক্ষা পূর্বে উত্তপ্ত বালুতে ভাজিয়া লইয়া রাঁধিলে তবে তাহার স্বাদ উৎকৃষ্ট হয়। শিম, বরবটী, বোরা প্রভৃতির বীচি বালুতে ভাজিয়া না লইলে তাহার সূপ অখাদ্য হয়। অড়হরের ডাইল কাঁচা রাঁধিলে