পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

`०8२ বিভূতি-রচনাবলী -छूहे খুব sincere, যদিও একটু ছিট্টগ্রস্ত— অপু লজ্জামিশ্রিত হাস্তের সহিত বলিল—যা— প্রণব বলিল—কিন্তু কলেজটা ছেড়ে ভাল কাজ করিস নি, যদিও আমি জানি তাই সেদিন বিনয়কে বলছিলাম যে অপূর্ব কলেজে না গিয়েও যা পড়াশুনা করবে, তোমরা দু’বেলা কলেজের সিমেন্ট ঘষে ঘষে উঠিয়ে ফেললেও তা হবে না । ওর মধ্যে একটা সত্যিকর পিপাসা রয়েছে যে— নিজের প্রশংসা শুনিয়া অপু খুব খুশী—বালকের মত খুশী। উজ্জলমুখে বলিল—অনেকদিন পরে তোর সঙ্গে দেখা, চল তোকে কিছু খাওয়াইগে—কলেজ মেটুদের আর কারুর দেখা পাই নে—আমোদ করা হয় নি কতদিন যে—ম মারা যাওয়ার পর থেকে তো - প্রণব বিস্ময়ের মুরে বলিল—মাও মারা গিয়েছেন! —ও, সে কথা বুঝি বলি নি ? সে তো প্রায় এক বছর হতে চলল— সামনেই একটা চায়ের দোকান। অপু প্ৰণবের হাত ধরিয়া সেখানে চুকিল। প্রশবের ভারি ভাল লাগিল অপুর এই অত্যস্ত থাটি ও অকৃত্রিম, আগ্রহভরা হাত ধরিয়া টানা । সে মনে মনে ভাবিল—এরকম warmth আর sincerity ক'জনের মধ্যে পাওয়া যায় ? বন্ধু তো মুখে অনেকেই আছে—অপু একটা জুয়েল। অপু বলিল—কি থাবি বল ?...এই বেয়ারা, কি আছে ভাল ? খাইতে খাইতে প্রণব বলিল—তারপর চাকরির কথা বল—যে বাজার—কি ক’রে জোটালি ? অপু প্রথমে লোহার বাজারের দালালির গল্প করিল। হাসিয়া বলিল—তারপর আবদুলের মহাভিনিষ্ক্রমণের পরে হার্ডওয়ার আর জমলে না—ঘুরে ঘুরে বেড়াই চাকরি খুঁজে, বুঝলি— একদিন একজন বললে, বি-এন-আর আফিসে অনেক নতুন লোক নেওয়া হচ্ছে—গেলুম সেখানে । খুব লোকের ভিড়, চাকরি অনেক খালি আছে, ইংরিজি লিখতে-পড়তে পারলেই চাকরি .হচ্ছে। ব্যাপার কি, শুনলাম মাস-দুই হ’ল স্ট্রাইক চলছে—তাদের জায়গায় নতুন লোক নেওয়া হচ্ছে— প্রণব চায়ে চুমুক দিয়া বলিল—চাকরি পেলি ? —শোন না, চাকরি তখুনি হয়ে গেল, প্রিন্সিপ্যালের সার্টিফিকেটটাই কাজের হল, ওখুনি ছাপানো ফর্মে য়্যাপয়েণ্টমেণ্ট লেটার দিয়ে দিলে, বাইরে এসে ভারি আনন্দ হল মনটাতে। চল্লিশ টাকা মাইনে, যেতে হবে গঞ্জাম জেলায়, অনেকদুর, যা ঠিক চাই তাই—বেটিক স্ট্রটের মোড়ে একটা দোকানে বসে মনের খুশীতে উপরি উপরি চার কাপ চ খেয়ে ফেললাম— ভাবলাম এতদিন পর পয়সার কষ্টট তো ঘুচল ? “আর কি খাবি ? এই বেয়ারা আর দুটো ডিম ভাজা—ন-না থা— --দু'দিন চাকরি হয়েছে বলে বুঝি—তোর সেই পুরানো রোগ আজও—ই তারপর ? —তারপর বাডি এসে রাতে শুয়ে.শুরে মনটাতে ভাল বললে না—ভাবলাম, ওরা একটা