পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম অধ্যায়-ঝাল।
১৫৫

ঝোলে বাটা ঝাল এককালে পড়ে না, পড়িলেও একমাত্র লঙ্কাবাটা কিছু পড়ে, ঝালে জিরা-মরিচ বাটা অবশ্য দেয় এবং তৎসহ আবশ্যকানুযায়ী আরও লঙ্কা বাটা, ধনিয়া বাটা, পিপুল বাটা, তেজপাত বাটা প্রভৃতি পড়িয়া থাকে।

 নিরামিষ ঝোলে সাধারণতঃ ডাইল, বিশেষতঃ মটর ও ছোলর ডাইল, ফেলান হইয়া থাকে, নিরামিষ ঝালে সাধারণতঃ বুট (খোসা সমেত), ডাইলের জল-বড়া (ধোকা), ডাইলের চাপড়ী ভাজা, মটর শুটী, মাষকলায়ের বড়ী (ভাজা) অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। কিন্তু উভয়ই চেলেনী জল দিয়া রাঁধা যায়।

 পাঁচমিশালী আনাজের নিরামিষ ‘ঝোল’ শুকাইয়া রাঁধিলে তাহাকে যেমন ‘লাফরা বা লাবরা’ কহে, পাঁচ মিশালী আনাঙ্গের নিরামিষ ‘ঝাল’ শুকাইয়া রাঁধিলে তাহাকে তেমনই ‘ঝাল-লাফরা’ বলা যাইতে পারে। লাফরার ন্যায় ঝাল-লাফরাতেও লাফা-বেগুণ কিম্বা বিলাতী কুমড়া মিশাইয়া লপেট গোছ করিয়া লইতে হয়। এতদুভয়েই চেলেনী জল ব্যবহৃত হয় না। একাধিক প্রকারের আনাজে পক্ব ঝাল-বসার আনাজ বা আমিষাদি গোটা রাখিয়া রসটুকু শুকাইয়া ফেলিলে তাহা চড়চড়ীর ন্যায় প্রতিভাত হইবে। এইরূপ ব্যঞ্জনকে ‘ঝাল-চড়চড়ী’ আখ্যা প্রদান করা হইয়া থাকে। সুতরাং নামে চড়চড়ী হইলেও প্রকৃতপক্ষে ইহা ‘ঝাল’ অধ্যায়ের অন্তর্গত বটে। ঝাল-চড়চড়ীতে সচরাচর মাষকলাইর বড়ী (ভাজা) ও মটর শুটী প্রভৃতি অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। ইহা চেলেনী জলের পরিবর্ত্তে শুধু জলে রাঁধিয়া পরে পিঠালী দিয়া শুকাইয়া চড়চড়ে গোছ করিয়া লইয়া নামান হয়।

 ‘ঘণ্টের’ সহিত ‘ঝালের’ পার্থক্য,—ঘণ্টে আনাজ মিহি করিয়া কুটিয়া লইতে হয়, তাহা অপেক্ষাকৃত অধিক কষাইতে হয় এবং সমস্ত উত্তমরূপে ঘাঁটিয়া মিশাইয়া অবশেষে বেশী পরিমাণে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া লইয়া অপেক্ষাকত শুক্না অথচ নসনসে করিয়া রাঁধিয়া নামাইতে হয়। ঝালে আনাজ