পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৮
বরেন্দ্র রন্ধন।

থাকিবে। কমে পুরাতন হইয়া যখন কাসুন্দিতে ‘ছাতা’ পড়িবার উপক্রম হইবে, তখন সরিষার তৈল মিশাইয়া পচন হইতে রক্ষা করিবে।

 বারসজের গুঁড়া—বরেন্দ্র ধনিয়াকে সাধারণতঃ ‘সজ’ বলিয়া থাকে। এই হেতু ধনিয়াদি অপরাপর সমধর্ম্মাপন্ন মশল্লাকেও কাসুন্দি উঠানের পরিভাষাতে ‘সজ’ বলা হয়। এই সজের সংখ্যা যে ঠিক বার তাহা নহে। ব্যক্তিগত রুচি এবং স্থলগত সুলভতা অনুসারে সজের সংখ্যা কমি বেশী হইয়া থাকে। আমাদের বাটীতে যে যে মশল্লায় বার-সজ পূরণ কর হয় তাহা এই:—(১) ধনিয়া ৴ ৷৹ এক পোয়া, (২) জিয়া ৴ ৷৹ এক পোয়া, (৩) গোলমরিচ ৴ ৷৹ এক পোয়া, (৪) পিপুল ১ তোলা, ৫) শুক্নালঙ্কা ৴১ এক সের, (৬) তেজপাত ৴৵৹ আধ পোয়া, (৭) রাঁধনী ৴৹ এক ছটাক, (৮) শলুপ শাকের বীজ ৴৵৹ আধ পোয়া, (৯) মৌরী ৴ ৷৹ এক পোয়া, (১০) কালজিরা ১ তোলা, (১১) মেথি ১ তোলা, (১২) জবাইন ৴৹ এক ছটাক, (১৩) বড় এলাচী ৴৹ এক ছটাক, (১৪) গুজরতী বা ছোট এলাচী ৴৹ এক ছটাক, (১৫) লবঙ্গ আধ ছটাক (১৬) দারুচিনি ৴ এক ছটাক, (১৭) জৈত্রী আধ তোলা এবং (১৮)জায়ফল ২টি হিসাবে ৷৹ দশ সের সরিষার গুঁড়ায় লওয়া হয়।

 এই সমস্ত মশল্লা লিখিত হিসাবে লইয়া ঝাড়িয়া বাছিয়া কাট-খোলায় ভাজ। ঢেঁকিতে মিহি করিয়া কুট। চালনীতে (আটা চালায়) চালিয়া ফাকী টুকু লও। চালুনীতে একবার চালিয়া লইলে ফাকী সম্পূর্ণ বাহির হয় না বলিয়া চালুনীতে অবশিষ্ট ‘মলিখা’ টুকু লইয়া পুনঃ ঢেঁকিতে কুটিয়া পুনঃ চালিয়া লইতে হয়। তথাপি শেষ পর্যন্ত কিছু ‘মলিখা’ অবশিষ্ট থাকিয়া যায়। সজের গুঁড়ার এই অবশিষ্ট মলিখার সহিত সরিষার গুঁড়ার অবশিষ্ট মলিখা মিশাইয়া ‘ফুল-কাসুন্দি’ প্রস্তুত করা হয়।

 ‘সজের’ গুঁড়ার সহিত ‘ঝালের’ গুঁড়ার পার্থক্য—ঝালের গুঁড়ায় গোল এ-মরিচ অথবা একত্রে জিরা-মরিচকে খ্যতঃ ‘ঝাল’ কহে এবং ধনিয়া