পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৌরীফুল ՀԵՋ করে বসিয়ে রেখেছেন ? একটা ভেঙেছেন যে এমনি করে সেদিন হা, আমি তো এই গাড়িতেই ষাবো.একটা সেফটি-পিন দেখেছেন কোথাও ?...কোন প্রশ্নটির উত্তর স্বরেশ আগে দেবে ভেবে ঠিক করবার আগেই রেণু বলে উঠলো—না, সে পাওয়া যাবে না। আচ্ছা আমি যাই, গাড়ি এল বলে. কথা শেষ করেই হঠাৎ সে সুরেশের পায়ের কাছে উপুড় হয়ে প্রণাম করে উঠে শাস্ত নত মুখে সদর দরজা পার হয়ে চলে গেল। পূর্বেও ঘরে কেউ ছিল না, এখনও কেউ নেই—তবুও সন্ধার ট্রেনথান পাস করে দিয়ে বাসায় ফিরে এসে সুরেশের মনে হোল—সব খালি, কেউ কোথাও নেই, ঘরের আসবাব-পত্ৰ শূন্ততায় ভরা . মাসখানেক পরে বড়বাবু স্বরেশের কাছে এক অভাবনীয় প্রস্তাব উত্থাপিত করলেন। সে র্তার ভগ্নিপতির স্বঘর, বিশেষত: রেণু মেয়েটিকে সে অবশুই দেখেছে, সংক্ষেপে রেণুর সঙ্গে তার বিবাহের প্রস্তাব । প্রথমে সুরেশের কথাটা যেন বিশ্বাস করতে ইচ্ছা গেল না, পরে সে চুপ করে রইলো। বড়বাবু প্রবীণ ব্যক্তি, সুরেশের বয়স সবে তেইশ, সুতরাং বড়বাবু মুরেশের সঙ্গে এ-বিষয়ে এর বেশি আর কোন কথাবার্তার আবশ্বক দেখলেন না। তার কাছে ঠিকানা জেনে নিয়ে তার জ্যাঠামশায়কে পত্র দিলেন । বিবাহের যোগাযোগ ও অন্তগ্ৰন্স কথাবার্তা চলতে লাগলো। ইতিমধ্যে সুরেশের জ্যাঠামশায় রেণুর বাপের কর্মস্থানে পাত্রী দেখে এসে সুরেশকে ও বড়বাবুকে জানালেন—পাত্র সুন্দরী, তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। সামনের মাসেই শুভকাজ সম্পন্ন হয় এই তার ইচ্ছা। শীঘ্রই কিন্তু একটু গোল বেধে গেল। উভয়ের ঠিকুজী কোষ্ঠী মেলাতে গিয়ে দেখা গেল মেয়ের রাক্ষস-গণ! মিলনের বহু বাধা, নক্ষত্রেরা সব তির্যগ-গতিতে অবস্থান করছেন—বিবাহ অসম্ভব। সুরেশের বিধবা মা কেঁদে বললেন–র্তার ছেলের নর-গণ, তিনি কখনই এ পাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেবেন না। জ্যাঠামশায়ও সম্মতি দিতে পারলেন না, তবে খুব দুঃখিত হলেন, কারণ মেয়েটিকে তার ভারী ভাল লেগেছিল। সুরেশ বাড়িতে চিঠিপত্র দেওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে। তবে তার স্বগ্রামস্থ কোন বন্ধুকে লিখিত পত্রের সংবাদে বাড়ির সকলে জানতে পারলে যে সে শীঘ্রই গেরুয়া ধারণ করে রামকৃষ্ণ-মঠে যোগ দেবে। মুরেশের মা দেশ থেকে রেলের বাসায় এসে পড়লেন। নানা মতে বোঝালেন, কান্নাকাটিও কম করলেন না। পাচীর-মার মুখে রেণু ও মুরেশের পূর্ব পরিচয়ের সব কথা শুনে বললেন—কোথাকার এক রাক্ষুসি সে আমার ছেলেকে ফাজ পেতে ধরতে এসেছিল। তোর বিয়ে না হয় এমনি বেঁচে থাক। দরকার নেই আমার ছেলের বউয়ের সেবার-ইত্যাদি । বিবাহ হোল না। বিবাহ ভাঙবার পর থেকে বড়বাবুর বাসার সঙ্গে মুরেশের সম্ভাবও আর তেমন রইলো না। বড়বাবু আর ভাল করে কথাই বলেন না। aد-سچ ہصلى الله عليه وسلم .)f