পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्रङियांत्विक VIII নিশ্চয়ই ফেলে দিতে!—কিন্তু ওদের প্রধান অসুবিধে ডালে গাড়ির দরজাট । দরজা যদি বাইরের দিকে খোলা থাকতে হবে দুজনে মিলে ঠেলতে পারতে বা এই রকম কিছু। কিন্তু এটা ভিত্তর দিকে খোলা যায়, সেই ধরনের দরজা। গাডির বাঁকুনিতে সেটা কেবল ঝুপ কুপ করে বন্ধ হয়ে যাচ্চে—মুতরাং একজনকে ধরে থাকার দরকার সেটাকে । আমি ওদের সঙ্গে কোনো চচামেচি কি গোলমাল করচি.ন—মথা মনেকটা ঠাণ্ড করে রেখেচি,কারণ আমার মনে হল ক্রমে যে এবং মাশুল হয়েচে–এর কি করচে দের জ্ঞান নেই । ঝগড়া কি চেঁচামেচি করলে মাতাল অবস্থায় রেগে চাং-কি অমিয় গুণ করে ৪ বসতে পারে। ট্রেনের বেগও কমে না, কোনো স্টেশনে4 অসে না । শেকল টানবার উপায়ই নেই— কারণ যে দরজা দিয়ে তারা আমার ফেলে দেবে, শেকল টানতে গেলে তো সেই দরজার কাছেই যেতে হয়—দরজার মাথার ওপর শেকল টানার হাতল । আমি ওদের ক্রমাগত বোঝবার চেষ্টা করচি, একজনকে মেরে ফেলে ওদের লাভ কিছু নেই—বরং তাতে পুলিসের ভীষণ হাঙ্গামে পডে যেতে হবে। তা ছাড়া, নরহত্যা মহাপাপ, রামচন্দ্রজি ওতে যে রকম চটেন অমন আর কিছুতেই চটেন না। স্বর্গে যাবার অতবড় বাধা আর নেই। তুলসীদাসের તંજ્ઞ এক আধটা মনে আনবার চেষ্টা করলুম—কারণ "রামচরিতমানস আমার পডা ছিল—কিন্তু বিপদের সময় ছাত কি কিছু মনে আসে ! এমন সময়ে গাড়ির বেগ কমে এল—কোনো এক স্টেশনে আসটে এতক্ষণ পরে। মাঠের মধ্যে গাড়ি দাড়িয়ে গেল, সামনেই কি স্টেশন, লাহন ক্লিয়াল দে গুয়া নেষ্ট সিগন্তালে। গাড়ি দীড়াবার সঙ্গে সঙ্গে ওরা আমায় ছেড়ে দিলে । আমিও একটি কথা ৪ বললুম না। মাতালকে চটিয়ে কোনো লাভ নেই। পরের স্টেশনে গাড়ি দাড়ালে একটু পরেই। আমি আমার জিনিসপত্র সামান্ত যা ছিল, নিয়ে অন্ত কামরায় চলে গেলুম। রাত তখন এগারোটা কি তার বেশি ; একবার ভাবলুম গার্ডকে ঘটনাটা জানাই—কিন্তু ছোট স্টেশন, অন্ধকার রী ৪-—গার্ডের গাড়ি অনেক পেছনে, যেতে যেতে ট্রেন ছেড়ে দেবে। মনে মনে ভাবলুম, রাজবাড়ি স্টেশনে ট্রেন এলে রেলপুলিসকে বলবে;–কিন্তু রাজবাড়ি নেমে আর গোলমালের মধ্যে যেতে ইচ্ছে হল না। মাতালদের সঙ্গে একগাড়িতে ওঠ আমারই ভুল হয়েছিল। এর পরে যেখানে গিয়ে নামলুম, সেটা হল ফরিদপুর। নাম শুনে আসচি চিরকাল, অথচ কখনো দেখিনি ফরিদপুর—কি ভালো লেগে গেল জায়গাট । এখানে পূর্ববঙ্গের মেয়েদের স্নেহস্পর্শ লাভ করবার সৌভাগ্য আমার সর্বপ্রথম ঘটেছিল। কি জানি কেন তখনও মনে হয়েছিল এবং আমার আজও মনে হয় পূর্ববঙ্গের মেয়ের উদারতীয়, নিঃসঙ্কোচ আত্মীয়তায় ও মনের ঐশ্বর্ষে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের চেয়ে অনেক বড়। লেখাপড়ার দিক থেকেও পূর্ববঙ্গের মেয়েরা আমাদের অঞ্চলের মেয়েদের চেয়ে শিক্ষিতা। दि. ब्र २-२७