পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত ᏮᎸ সটি করিয়াছে বলিয়া। এরা নিতান্তই এই পৃথিবীর, এরই সঙ্গে এদের বখন আন্টেপণ্ঠে জড়ানো, ব্যাঙের ছাতার মতই হঠাৎ গজাইয়া উঠে, লাখে লাখে, পালে পালে জন্মায়, আবার পথিবীর বকেই যায় মিলাইয়া । এরই মধ্য হইতে সহস্র ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ ঘটনার আনন্দ, হাসিখশিতে দৈন্য-ক্ষুদ্রতাকে ঢাকিয়া রাখে—গড়ে চল্লিশটা বছর পরে সব শেষ। যেমন-ঐ পোকার সব শেষ হইয়া গেল তেমনি । এই অবোধ জীবগণের সঙ্গে ঐ বিশাল নক্ষত্র-জগতের, ঐ গ্রহ, উল্কা, ধমকেতু—ঐ নিঃসীম নাক্ষত্রিক বিরাট শন্যের কি সল্পক' ? সদরের পিপাসাও যেমন মিথ্যা, অনন্ত জীবনের স্বপ্নও তেমনি মিথ্যা—ভিজা জতার বা পচা বিচালী-গাদায় ব্যাঙের ছাতার মত যাহাদের উৎপত্তি—এই মহনীয় অনন্তের সঙ্গে তাদের কিসের সম্পক ? • মৃত্যুপারে কিছুই নাই, সব শেষ। মা গিয়াছে—অপণা গিয়াছে—অনিল গিয়াছে —সব দাঁড়ি পড়িয়া গিয়াছে—পণচ্ছেদ । - ঐ জ্যোতিবিজ্ঞানের বইখানাতে যে বিশ্বজগতের ছবি ফুটিয়াছে, ঐ পোকাটার পক্ষে যেমন তাহার কল্পনা ও ধারণা সম্পণে অসম্ভব, এমন সব উচ্চতর বিবৰ্ত্তনের প্রাণী কি নাই যাহাঁদের জগতের তুলনায় মানষের জগৎট। ঐ বইয়ের পাতায় বিচরণশীল প্রায় আনুবীক্ষণিক পোকাটার জগতের মতই ক্ষুদ্র, তুচ্ছ, নগণ্য ? . হয়ত তাহাই সত্য, হয়ত মানুষের সকল কল্পনা, সকল জ্ঞান-বিজ্ঞান মিলিয়া ষে বিশ্ববটার কল্পনা করিয়াছে সেটা বিরাট বাস্তবের অতি ক্ষুদ্র এক ভগ্নাংশ নয়,—তাহা নিতান্ত এ পৃথিবীর মাটির,•••মাটির• মাটির । * আধুনিক জ্যোতিবিজ্ঞানের জগতের তুলনায় ঐ পোকাটার জগতের মত ! হয়ত তাহাই, কে বলিবে হ্যাঁ কি না ? 尊 মানুষ মরিয়া কোথায় যায় ? ভিজা জনতাকে রৌদ্রে দিলে তাহার উপরকার ছাতা কোথায় যায় ? ষোড়শ পরিচ্ছেদ কুলের সেক্রেটারী স্থানীয় বিখ্যাত চাউল ব্যবসায়ী রামতারণগইয়ের বাড়িএবার প্রজার খব ধামধাম। কুলের বিদেশী মাস্টার মহাশয়েরা কেহ বাড়ি যান নাই, এই বাজারে চাকুরিটা যদি বা জটিয়া গিয়াছে এখন সেক্রেটারীর মনস্তষ্টি করিয়া সেটা তো বজায় রাখিতে হইবে। তাহারা পাজার কয়দিন সেক্রেটারীর বাড়িতে প্রাণপণ পরিশ্রম করিয়া লোকজনের আদরঅভ্যর্থনা, খাওয়ানোর বিলি-বন্দোবস্ত প্রভূতিতে মহাব্যস্ত, সকলেই বিজয়া দশমীর, পরদিন বাড়ি যাইবেন । অপর হাতে ছিল ভাঁড়ার। ঘরের চাজী-কয়দিন রাত্রি এগারোটা পৰ্যন্ত খাটিবার পর বিজয়া দশমীর দিনু বৈকালে সে ছটি পাইয়া কলিকাতায় আসিল । প্রায় এক বৎসরের একঘেয়ে ওই পাড়াগে"য়ে জীবনের পরে বেশ লাগে শহরের এই সজীবতা। এই দিনটার সঙ্গে বহু অতীত দিনের নানা উৎসব-চপল আনন্দসমতি জড়ানো আছে, কলিকাতায় আসিলেই যেন পরানো দিনের সে-সব উৎসবরাজি তাহাকে পরাতনসঙ্গী বলিয়া চিনিয়া ফেলিয়া প্রীতিমধরে কলহাস্যে আবার তাহাকে ব্যগ্ন আলিঙ্গনে আবদ্ধ করিয়া ফেলিবে । পথে চলিতে চলিতে নিজের ছেলের কথা মনে হইতে লাগিল বার বার। তাহাকে দেখা হয় নাই—কি জানি কি রকম দেখিতে হইয়াছে । অপণার মত, না তাহার মত ?. ছেলের উপর অপর মনে মনে খুব সন্তুষ্ট ছিল না, অপণার মৃত্যুর জন্য সে মনে মনে ছেলেকে দায়ী করিয়া বসিয়াছিল বোধ হয় । ভাবিয়াছিল, পাজার সময় একবার সেখানে