পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত రిరి হইতে পিন্ধ, কাথিয়াবাড়,মালব, পাঞ্জাব,-সারা আয’্যাবত্তকে ভ্ৰকুটি করিয়াদাঁড়াইয়া আছে। কোথাও সক্ষম কারকোয্যের প্রচেস্টা নাই বটে, নিষ্ঠুর বটে, রক্ষ বটে, কিন্তু সবটা মিলিয়া এমন বিশালতার সৌন্দৰ্য্য, পৌরুষের সৌন্দৰ্য্য, বম্ববরতার সৌন্দযর্গ –যা মনকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে, হৃদয়কে বজ্রমটিতে অাঁকড়াইয়া ধরে । সব আছে, কিন্তু দেহে প্রাণ নাই, চারিধারে ধ্বংসস্তুপ, কাঁটাগাছ, বিশৃঙ্খলতা, বড় বড় পাথর গড়াইয়া উঠিবার পথ বজাইয়া রাখিয়াছে—মতমথের ভ্ৰকুটি মাত্র । & সাধ নিজামউদ্দীনের অভিশাপ মনে পড়িল—ইয়ে বাসে গাজর, ইয়ে রাহে গাজর— পথীরায়ের দগের চবতেরার উপর যখন সে দাঁড়াইয়া – হি-হি, কি মশকিল, কি অদ্ভুতভাবে নিশ্চিন্দিপুরের সেই বনের ধারের ছিরে পুকুরটা এ দগের সঙ্গে জড়িত হইয়া আছে, বাল্যে তাহারই ধারের শেওড়াবনে বসিয়া 'জীবন-প্রভাত’ পড়িতে পড়িতে কতবার কল্পনা করিত, পাথীরায়ের দাগ ছিরে পুকুরের উচু ও-দিকের পাড়টার মত বুঝি। এখনও ছবিটা দেখিতে পাইতেছে – কতকগুলি গুগলি শামুক, ও-পারের বশিঝাড় । যাক, চবতেরার উপর দাঁড়াইয়া থাকিতে থাকিতে দরে পশ্চিম আকাশের চারিধারের মহামশানের উপর ধসের ছায়া ফেলিয়া সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের কাহিনী আকাশের পটে আগুনের অক্ষরে লিখিয়া সযf্য অস্ত গেল । সে সব অতি পবিত্র, গোপনীয় মহত্তে অপর জীবনের - দেবতারা তখন কানে কানে কথা বলেন, তাহার জীবনে এরপে সন্য’্যাস্ত আর কাটা বা আসিয়াছে ? ভয় ও বিস্ময় দুই-ই হইল, সারা গায়ে যেন কাঁটা দিয়া উঠিল, কি অপব অনুভুতি! জীবনের চক্লবালনেমি এতদিন যে কত ছোট অপরিসর ছিল, আজকার দিনটির পর্বে তাহা জানিত না । 叙 নিজামউদ্দীন আউলিয়ার মসজিদ প্রাঙ্গণে সম্রাট-দুহিতা জাহানারার তৃণাবত পবিত্র কবরের পাবে দাঁড়াইয়া মসজিদ-দ্বারে ক্লীত দু-চার পয়সার গোলাপফুল ছড়াইতে ছড়াইতে অপর অশ্র বাধা মানিল না। ঐখবয্যের মধ্যে, ক্ষমতার দম্ভের মধ্যে লালিত হইয়াও পণ্যেবতী শাহজাদীর এ দীনতা, ভাবকতা, তাহার কল্পনাকে ম’ব রাখিয়াছে চিরদিন । এখনও যেন বিশ্বাস হয় না যে, সে যেখানে দাঁড়াইয়া আছে সেটা সত্যই জাহানারার কবর-ভূমি । পরে সে মসজিদ হইতে একজন প্রৌঢ় মুসলমানকে ডাকিয়া আনিয়া কবরের শিরোদেশের মাৰেবল ফলকের সেই বিখ্যাত ফাসী কবিতাটি দেখাইয়া বলিল, মেহেরবানি করকে পঢ়িয়ে, হাম লিখ লেঙ্গে । প্রৌঢ়টি কিঞ্চিৎ বকশিশের লোভে খামখেয়ালী বাঙালী বাবটিকে খ,শী করার জন্য জোরে জোরে পড়িল— & বিজসে গ্যাহ কসে ন-পোশদ মজার ইমা-রা। কি করবঁপোষ-ই-ঘরীবান হামিন মদীগ্যাহ বস অস্ত । পরে সে কবি আমীর খসরুর কবরের উপরও ফুল ছড়াইল । পরদিন বৈকালে শাহজাহানের লালপাথরের কেল্লা দেখিতে গিয়া অপরাহের ধসর ছায়ায় দেওয়ান-ই-খাসের পাশের খোলা ছাদে একখানা পাথরের বেঞ্চিতে বহনক্ষণ বসিয়া রহিল। মনে হইল এসব স্থানের জীবনধারার কাহিনী কেহ লিখিতে পারে নাই। গল্পে, উপন্যাসে, নাটকে, কবিতায় যাহা পড়িয়াছে, সে সবটাই কল্পনা, বাস্তবের সঙ্গে তাহার কোন সম্পক' নাই । সে জেবউন্নিসা, সে উদ্বিপরী বেগম, সে মমতাজমহল, সে জাহানারা —আবাল্য যাহাদের সঙ্গে পরিচয়, সবগুলিই কল্পনা-সটি প্রাণী, বাস্তবঞ্জগতের মমতাজ বেগম, উদিপরেী, জেবউন্নিসা হইতে সক্ষপণ পথক । কে জানে এখানকার সে সব রহস্যভরা ইতিহাস ? মাক যমুনা তাহার সাক্ষী আছে, গ,হভিত্তির প্রতি পাষাণখণ্ড