পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રo8 বিভূতি-রচনাবলী বেশি বলে কিছুতেই মনে হয় না, এমনি লাবণ্যভরা মুখশ্ৰী । প্রভাসের দিকে চেয়ে বললে, দেখনে তো আর চিনি দেব কি না— প্রভাস চায়ে চুমকৈ দিয়ে একটু সঙ্কোচের সরে বললে, আজ্ঞে না । আমি চিনি কম খাই— কেদার বললেন, তার পর, কি মনে করে বাবাজি ? প্রভাস যেন আমতা আমতা করে উত্তর দিলে—ইয়ে—এই কিছু না—এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম কি না !•••তাই— —বেশ বেশ । বোসো বাবাজি— প্রভাস চা পান করে বসে রইল বটে, তবে একটু উশখশ করতে লাগল। বসে থাকাটা তার পক্ষে যেন বড়ই অস্বাচ্ছন্দ্যকর হয়ে উঠছে । অথচ মুখেও কোনো কথা যোগায় না। এমন অবস্হায় সে কখনো পড়ে নি । কেদার বললেন, তুমি কালই তো কলকাতায় যাবে—না ? —আজ্ঞে হ্যা, কাল দুপুরে রওনা হবো খেয়ে-দেয়ে । আবার সে একটু উশখশ করতে লাগল । তার এ ভাবটা বন্ধুিমতী শরতের চোখ এড়ালো না । তার মনে হ’ল প্রভাস কিছ বলবার জন্যে এসেছে—কিস্ত তা বলতে পারছে না । সে একটু বিস্ময়মিশ্রিত কৌতুহলের দটিতে প্রভাসের দিকে চেয়ে রইল। পরক্ষণেই প্রভাস পকেট থেকে একটা ছোট মখমলের বাক্স সসকোচে বার করে বললে, এইটে এনেছিলাম দিদির জন্যে— _ কেদার বিস্ময়ের স্বরে বললেন, কি ওটা ? –এই গিয়ে--একটা আংটি— —শরতের জন্যে এনেছ ? —হ’্যা—ভাবলাম, কখনো আসিনে—যখন আলাপ হয়েই গেল আপনাদের সঙ্গে, তাই— কেদার হাত বাড়িয়ে মখমলের বাক্স হাতে নিয়ে বললেন, দেখি ? বাঃ বাক্সটি বেশ ! আংটিটা—এ যে দেখছি বেশ দামী জিনিস ! এ তুমি আনলে কোথা থেকে 2 —ওবেলা মোটরে চলে গিয়েছিলাম রাণাঘাট। সেখান থেকে কিনে এনেছি—আমার জানাশনো দোকান, এ জিনিস বাইরে শো-কেসে সাজিয়ে রাখে না। আমাকে চেনে বলে বার করে দিলে । —কত দাম নিয়েছে ? প্রভাস সলজভাবে বললে, সে কথা আর কেন জিজ্ঞেস করছেন কাকাবাব । দাম আর কি, অতি সামান্য—আপনাদের দেওয়ার মত কিছল না— কেদার আংটিটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে বললেন, আমার মনে হচ্ছে তুমি বেশ পয়সা খরচ করেছ। এ পাথরখানা তো বেশ দ্বামী, হীরে বোধ হয়—না ? প্রভাস একটু উৎসাহের সরে বললে, আজ্ঞে হ’্যা । দেড় রাত ওজন, আসল পাথর। তবে দামদস্তরের কথা এখনও সেকরার সঙ্গে কিছ হয় নি— কেদার বাক্সটা প্রভাসের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, কেন এত খরচপত্র করতে গেলে অনথাক ? এ তুমি নিয়ে যাও বাবাজি । এ দরকার নেই। প্রভাসের মখে যেন কে কালি লেপে দিল। সে ভয়ে ভয়ে বললে—এনেছিলাম দিদিকে দেবো বলে—খবে আশা করেছিলাম—যদি অপরাধ না নেন— —না বাবাজি—শরৎ বিধবা মানুষ, ও আংটি-টাংটি পরে না তো । ও বড় গোঁড়া ধরণের