পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা ఇSa যাবো। আমার যত ভয় এই গড়ের মধ্যে । —আর আমি একলাটি এখন কতক্ষণ পয্যন্ত বসে থাকবো তার ঠিক আছে ? বাবা যে কখন ফিরবেন । তুই থাকলে বন্ড ভাল হত। থাক না লক্ষাটি—আর একটু চা খাবি ? • কিন্ত রাজলক্ষী আর থাকতে চাইল না । বেশি রাত পয্যন্ত বাইরে থাকলে মা ভারি বকবে । একলাটি অন্ধকারে যেতে ভয়ও করে । কেদার-জ্যাঠার আসবার ভরসায় থাকতে গেলে দপররাত হয়ে যাবে, বাপ রে । 矚 কেরোসিনের টেমি ধরে শরৎ গড়ের খাল পয্যন্ত রাজলক্ষয়ীকে এগিয়ে দিল । রাজলক্ষী খাল পার হয়ে ওপারের রাস্তায় উঠে বললে, তুমি যাও শরৎদি, গোয়ালাদের বাড়ির আলো দেখা যাচ্ছে—আর ভয় নেই। যেতে যেতে সে ভাবছিল, নৈহাটি কেমন জায়গা না জানি । সংসারে বেশী ঝামেলা না থাকাই ভালো । ম্যাট্রিক পাশ ছেলে মন্দ নয় । ছেলের রংটা কালো না ফস ঃ চার শীত কমে গিয়েছে—বসন্তের হাওয়া দিতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সজনে গাছে থোকা থোকা ফুল দেখা দিয়েছে । 象 কেদার নিজের গ্রামেই একটি কৃষ্ণযাত্রার দল খালেছেন । সম্প্রতি এ অঞ্চলে কৃষ্ণযাত্রার একটা হিড়িক এসে পড়েছে—গত পজোর সময় থেকে এর সত্রপাত ঘটে, বত্তমানে মহামারীর মত গ্রামে গ্রামে হািজক ছড়িয়ে পড়েছে । কেদার হটবার পাত্র নন, তাঁর গ্রামকে ছোট হয়ে থাকতে দেবেন কেন—জেলেপাড়া, কামারপাড়া এবং কুমেরিপাড়ার লোকজন জটিয়ে তিনিও এক দল খলে মহা উৎসাহে মহলা আরম্ভ করেছেন । নানাহারের সময় নেই তাঁর, ভারি ব্যস্ত । সম্প্রতি তাঁর দলের গাওনা হবে চৈত্রমাসে অন্নপণ প্রজার দিন, গ্রামের বারোয়ারি তলায়। বেশি দেরি নেই, দেড় মাস মাত্র । সীতানাথ জেলের বাড়ির বাইরে বড় ছ-চালা ঘর। যাত্রার দলের মহলা এখানেই রোজ বসে । অন্য সকলের আসতে একটু রাত হয়, কারণ সবাই কাজের লোক—কাজকর্ম" সেরে আসতে একটু দোঁরই হয়ে পড়ে। কেদারের কিন্ত সন্ধ্যা হতে দেরি সয় না, তিনি সকলের আগে এসে বসে থাকেন । সীতানাথ বাড়ি নেই—শীতকালের মাঝামাঝি নেীকো করে এখান থেকে পাঁচ দিনের পথ চণী নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছে—এখনও দেশে ফেরে নি। সীতানাথের বড় ছেলে মানিক বাড়িতে থাকে ও গ্রামের নদীতেই মাছ ধরে স্হানীয় হাটে বিরুী করে সংসার চালায়। আজ পরো মহলা হবে বলে সে সকাল সকাল নদী থেকে ফিরে এসে বাইরের ঘরে বড় বড় খানকতক মাদর ও চট পেতে আসর করে রেখেছে। কেদারকে বললে, বাবাঠাকুর, তামাক কি আর এক বার ইচ্ছে করবেন ? —তা সাজ না হয় একবার t হT্যারে মানকে, এরা এখনো সব এল না কেন ? —আসছে বাবাঠাকুর, সবাই কাজ সেরে আসছে তো, একটু দেরি হবে । —তুই তামাক সেজে একবার দেখে আয় দিকি বিশ কুমোরের বাড়ি । ওর ছেলেটাকে না হয় ডেকে আন। সে রাধিকা সাজবে, তার গানগুলো ততক্ষণ বেহালায় রপ্ত করে দিই— কথা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে জন দুই অভিনেতা ঘরে ঢুকলো—একজন ছিবাস মদি আর একজন হৃষিকেশ কলম"কার ।